মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Trump) ঘোষণা করেছেন যে, তিনি আগামী সোমবার ১৮ আগস্ট ওয়াশিংটনের ওভাল অফিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এই ঘোষণা এসেছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় অনুষ্ঠিত একটি শীর্ষ সম্মেলনের পর, যেখানে ইউক্রেন ইস্যুতে কোনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
এই বৈঠকটি বিশ্ব রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা এখন তীব্র পর্যবেক্ষণের মধ্যে রয়েছে। এক্স প্ল্যাটফর্মে পাওয়া পোস্ট অনুযায়ী, ট্রাম্প সম্প্রতি আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একটি শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হয়েছেন।
এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে আলোচনা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা খুঁজে বের করা। তবে, এই আলোচনা কোনও কংক্রিট ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতে “হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করার” জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কোনও চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি। এক্স-এ পোস্ট করা তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প বলেছেন, “পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়েই শান্তি চান, তবে এই বিষয়টি জটিল।”
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, ইউক্রেনের কিছু অঞ্চলের বিনিময়ে সমঝোতার সম্ভাবনা থাকতে পারে, যদিও এটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ট্রাম্পের আমন্ত্রণে জেলেনস্কির ওভাল অফিস সফর ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের একটি শক্তিশালী বার্তা। এই বৈঠকের মাধ্যমে ট্রাম্প ইউক্রেনকে সামরিক ও কূটনৈতিক সহায়তার বিষয়ে আশ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
এক্স-এ পোস্ট অনুযায়ী, ট্রাম্প বলেছেন, “জেলেনস্কিকে এখন সবকিছু প্রস্তুত করতে হবে, কারণ তাকে কিছু স্বাক্ষর করতে হবে।” এটি ইঙ্গিত দেয় যে, ইউক্রেনের সঙ্গে কোনও শান্তি চুক্তির জন্য প্রস্তুতি চলছে। তবে, ট্রাম্প এও স্পষ্ট করেছেন যে, পুতিনের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের জন্য জেলেনস্কির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক নয়, যা হোয়াইট হাউসের পূর্বের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এই বৈঠকের মাধ্যমে ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রতি তাঁর প্রশাসনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করতে পারেন। জেলেনস্কি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও সামরিক সহায়তা এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন চাইছেন। তবে, ট্রাম্পের “অঞ্চল বিনিময়” সংক্রান্ত মন্তব্য ইউক্রেনের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে, কারণ এটি ইঙ্গিত দেয় যে, শান্তি চুক্তির জন্য ইউক্রেনকে কিছু অঞ্চল ছাড়তে হতে পারে।
ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত ২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি এই সংঘাতের সমাধানে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে চান। তাঁর “শান্তির প্রেসিডেন্ট” হিসেবে পরিচয় দেওয়ার প্রচেষ্টা এক্স-এ ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে।
তবে, পুতিনের সঙ্গে তাঁর আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় এবং জেলেনস্কির সঙ্গে আসন্ন বৈঠকের প্রেক্ষাপটে, ট্রাম্পের কূটনৈতিক কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। হোয়াইট হাউসের পূর্বের বক্তব্যে বলা হয়েছিল যে, পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য জেলেনস্কির উপস্থিতি একটি শর্ত, কিন্তু ট্রাম্প এই শর্ত শিথিল করেছেন বলে মনে হচ্ছে।
এক্স-এ পোস্ট অনুযায়ী, ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টাকে কেউ কেউ মানবতার জন্য একটি বড় জয় হিসেবে দেখছেন। তবে, ইউক্রেনের অঞ্চল বিনিময়ের সম্ভাবনা নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। ইউক্রেনের জনগণ এবং জেলেনস্কি অঞ্চল ছাড়ার বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন, এবং এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও চাপ তাদের জন্য গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে।
রাশিয়ার দিক থেকে, পুতিন জেলেনস্কির সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় আগ্রহী নন বলে জানা গেছে, যা শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে।ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাজেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের এই বৈঠক ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের ধরন এবং শান্তি আলোচনার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ট্রাম্পের কূটনৈতিক পদক্ষেপ এবং তাঁর “অঞ্চল বিনিময়” প্রস্তাব কীভাবে বাস্তবায়িত হয়, তা বিশ্ব সম্প্রদায় নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এই বৈঠকের ফলাফল ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের সমাধানের পথে একটি নতুন দিশা নির্দেশ করতে পারে।
ডার্বি ম্যাচের গুরত্ব বুঝিয়ে হুঙ্কার লাল-হলুদ সৌভিকের
ট্রাম্পের আমন্ত্রণে জেলেনস্কির ওভাল অফিস সফর এবং পুতিনের সঙ্গে ব্যর্থ আলোচনার পর এই বৈঠক বিশ্ব রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টা সফল হলে এটি ইউক্রেন সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারে, তবে অঞ্চল বিনিময়ের প্রস্তাব এবং জটিল কূটনৈতিক সমীকরণ এই প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে। সোমবারের এই বৈঠক বিশ্বের নজরে থাকবে, কারণ এটি শান্তি প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে।