পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে নজিরবিহীন ক্ষোভ, লস্কর কমান্ডারদের তাড়ালেন গ্রামবাসীরা

পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) ঘটল নজিরবিহীন এক ঘটনা। স্থানীয়দের তীব্র বিরোধিতার মুখে লস্কর-ই-তইবা (LeT) জঙ্গি রিজওয়ান হানিফ ও তার দেহরক্ষীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হল কুইয়ান…

PoK Anti-Terrorism Sentiment

পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) ঘটল নজিরবিহীন এক ঘটনা। স্থানীয়দের তীব্র বিরোধিতার মুখে লস্কর-ই-তইবা (LeT) জঙ্গি রিজওয়ান হানিফ ও তার দেহরক্ষীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হল কুইয়ান গ্রাম থেকে। এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবিরোধী মনোভাবের এক উল্লেখযোগ্য পালাবদল হিসেবে দেখছেন কূটনৈতিক মহল (PoK Anti-Terrorism Sentiment)।

Advertisements

ঘটনার সূত্রপাত হয় হরওয়ানের সংঘর্ষে নিহত লস্কর জঙ্গি হাবিব তাহিরের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়। তাহিরের পরিবার হানিফের উপস্থিতির বিরোধিতা করলেও সে গ্রামে প্রবেশ করে। তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন কুইয়ান গ্রামের বাসিন্দারা। জঙ্গিদের প্রকাশ্য আগমনে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা। হানিফ ও তার সশস্ত্র অনুচরদের সরাসরি মুখোমুখি হয়ে গ্রামের বাসিন্দারা তাদের চলে যেতে বাধ্য করেন।

   

এই ঘটনার পর, কুইয়ান গ্রামে ‘জিরগা’ বা সম্প্রদায়ভিত্তিক সালিশ সভা ডাকবার ঘোষণা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ওই সভায় জঙ্গি সংগঠনের নিয়োগ ও কার্যকলাপ রুখতে কড়া সামাজিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

পিওকে-তে সাধারণ মানুষের মনে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থান। সম্প্রতি নিরাপত্তা সংস্থাগুলির কঠোর নজরদারি ও অভিযানের ফলে এলাকায় জঙ্গিদের জনসমক্ষে উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

এই ঘটনার সমান্তরালে, বাঘ জেলায় এক সম্মেলনের আয়োজন করতে চেয়েছিল জঙ্গিদের ঘনিষ্ঠ একটি গোষ্ঠী। কিন্তু প্রশাসন জননিরাপত্তার খাতিরে তাতে অনুমতি দেয়নি। ওই সম্মেলনে অস্ত্রধারীদের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা ছিল বলে জানা গিয়েছে। উপস্থিত থাকার কথা ছিল পিওকে-র পরিচিত মুখ নওমান শেহজাদেরও।

উল্লেখ্য, বহু দশক ধরে পাক অধিকৃত কাশ্মীর সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। লস্কর-ই-তইবা ও জইশ-ই-মহম্মদের মতো সংগঠনগুলি এখানে পাকিস্তানি সামরিক এবং গোয়েন্দা সংস্থার নীরব মদতে তাদের কার্যকলাপ চালিয়ে এসেছে। ভারতীয় ভূখণ্ডে একাধিক বড়সড় হামলার পিছনে এদের হাত রয়েছে বলেই আন্তর্জাতিক মহলের অভিযোগ।

কিন্তু কুইয়ানের মতো ঘটনা এই পুরনো বাস্তবতায় ধাক্কা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি পিওকে-তে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা এক নতুন জনচেতনার ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও বিস্তার লাভ করতে পারে।