ইসলামাবাদ: মঙ্গলবার পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে হামলা চালায় বেলুচিস্তান মুক্তি বাহিনী (BLA)৷ ১০৪ জন যাত্রীকে বন্দি বানায় তারা৷ পাকিস্তান নিরাপত্তা বাহিনী জানায়, এই বন্দিদের মধ্যে ৫৮ জন পুরুষ, ৩১ জন নারী এবং ১৫ জন শিশু ছিলেন।
পাকিস্তান তো বটেই আমেরিকা ও ব্রিটেনেও নিষিদ্ধ বেলুচিস্তান মুক্তি বাহিনী৷ এরা মূলত পাকিস্তানে সক্রিয় হলেও আফগানিস্তানে তাদের নেতাদের আশ্রয় নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ রয়েছে৷
আফগানিস্তানে মাস্টারমাইন্ড?
নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, হামলাকারীরা স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, যার মধ্যে আফগানিস্তানের এক মাস্টারমাইন্ডও ছিল। এছাড়াও, তারা নারী ও শিশুদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলেও জানা গিয়েছে৷
হামলার বিস্তারিত
মঙ্গলবার যাত্রীবোঝাই জাফর এক্সপ্রেসকে অপহরণ করেন বালুচ বিদ্রোহীরা। রাতভর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চেষ্টায় এখনও পর্যন্ত ১০৪ জনকে উদ্ধার করা গিয়েছে৷ হামলাকারীরা ট্রেন আক্রমণের আগে রেলপথে বোমা রেখে এবং লোকমোটিভে গুলি চালিয়ে ট্রেনের চালককে আহত করে। ট্রেনটি আফগানিস্তান-ইরান সীমান্তের কাছে একটি পাহাড়ি অঞ্চলে থেমে যায় এবং সেখানেই হাইজ্যাক করা হয়।
বিএলএ’র হুমকি
হামলার পরই বেলুচিস্তান মুক্তি বাহিনী (BLA) একটি বিবৃতিতে জানায়, “যদি পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে, তবে সব হোস্টেজকে হত্যা করা হবে।”
অভিযান চলমান
নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, অভিযানের সময় তারা হামলাকারীদের ঘিরে ফেলেছে, তবে পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালানো কঠিন। এখনও পর্যন্ত হতাহতের সংখ্যা নির্ধারণ করা যায়নি৷ ট্রেনের ড্রাইভার ও কয়েকজন যাত্রী গুলিতে আহত হয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নিন্দা
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এ ধরনের আক্রমণ অমানবিক এবং ঘৃণিত। যারা এই হামলা চালায়, তারা বেলুচিস্তান এবং তার ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে।”
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফও হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে সফল হতে চলেছে।”
এই হামলা পাকিস্তানে নতুন সন্ত্রাসী হুমকির একটি উদাহরণ, যেখানে আফগানিস্তানকে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।