ওয়াশিংটন: আমেরিকাকে তৈল-মর্দন করার যে কোনও সুযোগ হাতছাড়া করে না ভারতের প্রতিবেশী পাকিস্তান (Pakistan), তার প্রমাণ ফের একবার উঠে এল। সম্প্রতি ওভাল হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন পাক-প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif) ও সেনাপ্রধান আসিম মুনির (Asim Munir)। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে বৈঠকের পর ট্রাম্পকে পৃথিবীর এক ‘বিরল’ জিনিস দেখিয়েছেন তাঁরা। যা দেখে হতবাক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)।
কি এমন দেখাল পাকিস্তান?
সম্প্রতি ওভাল অফিস থেকে প্রকাশিত ট্রাম্প, শাহবাজ ও মুনিরের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি কাঠের বাক্স খুলে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে কিছু একটা দেখাচ্ছেন পাক-প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধান। হাসিমুখে বাক্সটি খুলে দেখাচ্ছেন মুনির। পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif)।
ওই বাক্সের মধ্যে পৃথিবীর এক ‘বিরল খনিজ’ (Rare Mineral) রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বস্তুটিকে খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন ট্রাম্প। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সঙ্গে একটি মার্কিন ধাতু কোম্পানির ৫০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরের কয়েক সপ্তাহের মাথায় ওভাল অফিসে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর ছবিটি তোলা হয়েছে।
“পাকিস্তানের মাটির নীচে ধনভান্ডার আছে”
প্রসঙ্গত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেনাপ্রধান মুনির ‘ধন’ বলে উল্লেখ করেছিল ইসলামাবাদ। সেইসঙ্গে পাকিস্তান (Pakistan) আশা করেছিল, আমেরিকা তাদের খনিজ দ্রব্য এবং অপরিশোধিত তেলের প্রতি আকর্ষিত হয়ে বানিজ্যে বিনিয়োগ করবে। “পাকিস্তানের মাটির নীচে ধনভান্ডার আছে।
সেই দিয়েই ঋণ শোধ করবে পাকিস্তান”, বলে উল্লেখ করেছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির। বলা বাহুল্য, এর আগে ২০১৯ সালে পাকিস্তানের সমুদ্র উপকূলে বিশাল খনিজ তেলের ভান্ডার আছে বলে দাবি করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। যদিও পরে তা বুজরুকি বলে প্রমাণিত হয়।
বছরের শুরুতে, শরীফ দাবি করেছিলেন যে পাকিস্তানের ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের খনিজ সম্পদ রয়েছে এবং খনিজ খাতে বিদেশী বিনিয়োগ দেশটিকে তার দীর্ঘস্থায়ী আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং বিশাল বিদেশী ঋণের বোঝা থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করতে পারে। বর্তমানে পাক-সরকারের আশা আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি দেশের নতুন সম্ভাবনার উন্মোচন করবে এবং জাতীয় অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করবে।
পাকিস্তানের খনিজ সম্পদ বালুচিস্তানে
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের বেশিরভাগ খনিজ সম্পদই দক্ষিণ-পশ্চিমের বালুচিস্তানে রয়েছে। যা বর্তমানে পাকিস্তানের জন্য ‘বিষফোঁড়া’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীন বালুচিস্তানের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA)। পাক-সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রায়শই তাঁদের সংঘর্ষ বাঁধছে।
আগস্ট মাসেই মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি এবং মাজিদ ব্রিগেডকে একটি “সন্ত্রাসী সংগঠন” হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই অস্থিরতার মাঝে বালুচিস্তান থেকে খনিজ সম্পদ আহরণ পাকিস্তানের পক্ষে কতটা সম্ভব হবে সেটাই দেখার। বর্তমানে কার্যক্রম সম্প্রসারণের দিকে মনোনিবেশ করেছে পাক-সরকার সহ বিনিয়োগকারীরা।