লাহোর, ৯ অক্টোবর ২০২৫: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজা সংক্রান্ত শান্তি চুক্তির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের রাস্তায় নেমে এসেছে তেহরিক-ই-লাবাইক পাকিস্তান (TLP)-এর হাজারো সমর্থক। লাহোর শহরে রাতভর চলে বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা পরিবেশ।
সংঘর্ষে আহত পুলিশ কর্মী
পঞ্জাব পুলিশের দাবি, শান্তি বজায় রাখতে চেষ্টা করার সময় টিএলপি-র কর্মীরা পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। এতে অন্তত তিনজন পুলিশকর্মী গুরুতর আহত হন। পাল্টা পুলিশও অশ্রু গ্যাস ছুঁড়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়।
কেন ক্ষুব্ধ টিএলপি?
ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গৃহীত শান্তি চুক্তিতে গাজা থেকে বন্দী মুক্তি ও মানবিক সাহায্য পৌঁছনোর কথা থাকলেও, টিএলপি-র মতো উগ্রপন্থী সংগঠনগুলো এটিকে “ইসরায়েলপন্থী” বলে মনে করছে। তাদের মতে, এই চুক্তি প্রকৃত অর্থে প্যালেস্তাইনের স্বাধীনতা আন্দোলনকে ক্ষুণ্ণ করছে।
টিএলপি-র অতীত রেকর্ড
এই প্রথম নয়—টিএলপি এর আগেও পাকিস্তানের রাজপথে সহিংস আন্দোলন করেছে। ২০২১ সালের ফয়জাবাদ অবরোধের সময় ছয়জন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। এবারও শান্তি চুক্তির প্রতিবাদে তারা শুক্রবার মার্কিন দূতাবাসের সামনে মিছিলের ডাক দিয়েছিল। সেই পরিকল্পনা বানচাল করতেই পুলিশ গত রাতে টিএলপি কার্যালয়ে অভিযান চালায়।
উত্তেজনার পেছনে রাজনীতি
পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিক্ষোভ কেবল গাজার ইস্যুই নয়, বরং পাকিস্তানের বর্তমান অস্থির রাজনীতি ও ভেঙে পড়া অর্থনীতির প্রতিফলন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এবং বিদেশনীতি নিয়েও জনমনে অসন্তোষ রয়েছে। তারই বহিঃপ্রকাশ লাহোরের রাস্তায় দেখা যাচ্ছে।
#BREAKING: Midnight violent clashes being reported from Lahore in Pakistan between Tehreek-e-Labaik and Punjab Police of Pakistan. Pakistani Police likely trying to seal Tehreek-e-Labaik HQs ahead of their protest march to US Embassy against Gaza Deal after Friday prayers. pic.twitter.com/Sj9paTqyM5
— Aditya Raj Kaul (@AdityaRajKaul) October 8, 2025
সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ
এখন পাকিস্তান সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কীভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা, বৈদেশিক সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সংকট—সব মিলিয়ে চাপ বাড়ছে শেহবাজ শরিফ প্রশাসনের ওপর।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, যদি এই বিক্ষোভ আরও বিস্তার লাভ করে, তবে তা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।