PAKISTAN: মেয়েদের শিক্ষায় বড় বাধা ‘শৌচালয়’

শিক্ষা অবশ্যই প্রত্যেকটা শিশুর মৌলিক অধিকার। পাশাপাশি বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে শিশুর শিক্ষা লাভ করাও অনস্বীকার্য। কিন্তু ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে হাজার হাজার শিশু…

শিক্ষা অবশ্যই প্রত্যেকটা শিশুর মৌলিক অধিকার। পাশাপাশি বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে শিশুর শিক্ষা লাভ করাও অনস্বীকার্য। কিন্তু ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে হাজার হাজার শিশু তাদের এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুধুমাত্র অস্বাস্থ্যকর স্যানিটাইজেশনের কারণে। বিশেষ করে স্কুলছুট হচ্ছে মেয়েরা। যা সেদেশের মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, গতবছর বন্যায় কুঞ্জের স্কুল সহ ২৭০০০ স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রথমে স্কুলে পড়াশোনা ভালোভাবেই চলছিল। কিন্তু বন্যার সময় স্কুল বাড়ি সব ভেসে যায়। কিছু স্কুল চালু হলেও সেখানে জল আর শৌচালয়ের এখনও ব্যাবস্থা হয়নি। ফলে অনেক মেয়ে এখন স্কুল যেতে পারছে না। পুরুষ শিক্ষক এবং ছাত্ররা অস্থায়ী টয়লেট ব্যবহার করেন কিন্তু সাংস্কৃতিক কারণে মেয়েদের পক্ষে তা সম্ভব হয়না।

এক শিক্ষকের দাবি বন্যার জল স্কুলের প্রাচীর, শৌচালয়ের প্রচুর ক্ষতি করেছে। বন্যার পর যখন স্কুল শুরু হয় তখন ১০০ র উপরে ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসতো। কয়েকদিন ছাত্রীরা এলেও পরে তা একদম কমে যায়। এখন কোনো ছাত্রীই স্কুলে আসে না। অভিভাবকদের দাবি, প্রাচীর এবং টয়লেট না থাকলে তারা তাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠাবে না। সঠিক সুবিধা না পেলে মেয়েদের হয়রানি ও কলেরা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন।

মিরপুরখাসের মহিলা স্কুলের শিক্ষিকা বদরুন্নেসা মেমন বলেন, বেশিরভাগ সরকারি স্কুল এমনকি কিছু বেসরকারি স্কুলেও সন্তোষজনক এবং পর্যাপ্ত টয়লেট সুবিধা নেই। স্কুলের টয়লেট এতটাই নোংরা যে সেগুলো ব্যবহার অযোগ্য। ছেলেরা খোলা মাঠে যেতে পারলেও মেয়েরা কোনও বিকল্প খুঁজে পায় না। হয় তাদের বাড়িতে বা নিকটবর্তী কোনও পরিচিতের বাড়িতে যেতে হয়। ওই শিক্ষিকার দাবি যথাযথ সুযোগ-সুবিধার অভাবে অল্প বয়সী মেয়েদের নিয়মিত স্কুলে যাওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে, বিশেষত ঋতুস্রাবের সময়।

ইউনেস্কো পাকিস্তান অ্যাসোসিয়েশন ফর কন্টিনিউয়িং অ্যান্ড অ্যাডাল্ট এডুকেশন (প্যাকেডি) এর সহযোগিতায় পাকিস্তান সংবিধানের ১৮তম সংশোধনীর ২৫-এ অনুচ্ছেদ বাস্তবায়ন এবং ইএফএ প্রচারের জন্য একটি ফোরামের আয়োজন করে। মূল আলোচ্য বিষয় ছিল সবার জন্য শিক্ষা। সরকারি জরিপে দেখা গেছে, সে দেশের ২২ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল বিল্ডিং নেই, ৮৬ শতাংশে বিদ্যুৎ নেই, ৪৬ শতাংশ স্কুলে টয়লেট নেই এবং ৫১ শতাংশ স্কুলে সুপেয় জলের ব্যবস্থা নেই। রিপোর্ট সামনে আসতেই চাপে পরে যান সেদেশের সরকার।

একজন শিক্ষিত মহিলা যেমন পরিবার গঠনে সাহায্য করেন তেমনি দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে। এখন মেয়েদের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্যে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের দিকে নজর রয়েছে সে দেশের বাসিন্দাদের।