শ্রীনগর: কাশ্মীরের হৃদয় শ্রীনগরের ডাল লেক আবারও খবরে। পর্যটকে ভরপুর এই হ্রদ থেকে সম্প্রতি উদ্ধার হল পাকিস্তানের এক ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ (Pak Missile)। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলাকালীনই নজরে আসে বিপজ্জনক এই বস্তু। বিশেষজ্ঞ দল এসে সেটিকে নিষ্ক্রিয় করার পর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে গেছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ইতিমধ্যেই ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যদি ক্ষেপণাস্ত্রটি বিস্ফোরিত হতো, তাহলে বড়সড় বিপর্যয় ঘটতে পারত। ডাল লেক প্রতিদিন হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটকের গন্তব্য। সেখানে সক্রিয় মিসাইল থাকাটা কাশ্মীরের নিরাপত্তার পক্ষে ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনতে পারত।
ঘটনার সূত্রপাত মে মাসে। ৬ ও ৭ মে রাতের মধ্যে ভারত চালায় ‘অপারেশন সিন্ধুর’। পাহালগাঁও সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত সরকার জানিয়েছিল, এবার পাকিস্তানের জবাব মিলবে। রাত ১টা ০৫ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে মাত্র ২৫ মিনিট ধরে চলে আক্রমণ। ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনা একযোগে ২৪টি মিসাইল ছুড়ে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে নয়টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে আঘাত হানে। এই অভিযানে অন্তত ৭০ জন জঙ্গি নিহত হয় বলে সেনা সূত্রে খবর।
অপারেশনের কয়েক দিনের মধ্যেই ১০ মে শ্রীনগরে শোনা গিয়েছিল বিস্ফোরণের শব্দ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, ডাল লেকে পড়ে যায় একটি ক্ষেপণাস্ত্রের মতো বস্তু। পানির মধ্যে পড়েই সেটি থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা গিয়েছিল। তবে সেটি সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরিত হয়নি। দীর্ঘদিন পানির নিচে পড়ে থাকার পর এবার উদ্ধার হলো তার ধ্বংসাবশেষ।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই আবিষ্কার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আক্রমণাত্মক মনোভাবের প্রমাণ বহন করে। তিনি বলেন, “আমরা যদি সময়মতো এটি খুঁজে না পেতাম, তাহলে বড় বিপদ ঘটতে পারত।” বর্তমানে সেনাবাহিনী এই মিসাইলের প্রযুক্তি পরীক্ষা করছে। পাকিস্তানের সামরিক ক্ষমতা, ব্যবহৃত প্রযুক্তি এবং ভবিষ্যৎ হুমকি সম্পর্কে এর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে আসবে।
ডাল লেক শুধুমাত্র একটি হ্রদ নয়, এটি কাশ্মীরি সংস্কৃতি ও পর্যটনের প্রতীক। গ্রীষ্মকালে এখানে ভিড় জমান হাজার হাজার পর্যটক। সেখানে পাকিস্তানি মিসাইলের পতন শুধুমাত্র নিরাপত্তা নয়, অর্থনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলতে পারত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনার পর পর্যটনকেন্দ্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।
ডাল লেকে পাকিস্তানি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হওয়া প্রমাণ করছে যে সীমান্তে হুমকি এখনও শেষ হয়নি। তবে ভারতীয় সেনা, পুলিশ এবং প্রশাসনের সতর্ক পদক্ষেপ শ্রীনগরকে একটি বড় বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
