বেনজির! নিজেই নিজেকেই শীর্ষ পদক দিলেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির

Pak army chief awards himself medal ইসলামাবাদ: পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে নজিরবিহীন দৃশ্যের সাক্ষী থাকল সে দেশের মানুষ৷ সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির নিজেই নিজেকে প্রদান…

Pak army chief awards himself medal

Pak army chief awards himself medal

ইসলামাবাদ: পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে নজিরবিহীন দৃশ্যের সাক্ষী থাকল সে দেশের মানুষ৷ সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির নিজেই নিজেকে প্রদান করলেন দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ যুদ্ধকালীন বীরত্বপদক ‘হিলাল-ই-জুরত’, যা ভারতের ‘মহাবীর চক্র’-এর সমতুল্য। সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে নেতৃত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক নিজের হাতে তুলে নিলেন তিনি। শুধু সেনাপ্রধানই নন, একই মঞ্চে পুরস্কৃত হলেন পাকিস্তানের প্রায় সব শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক নেতা।

পালন করা হল ‘মারকা-ই-হক’

গত জুলাইয়ে পাকিস্তানের পরিকল্পনা মন্ত্রী আহসান ইকবাল ঘোষণা করেছিলেন, এ বছরের স্বাধীনতা দিবস পালন করা হবে ‘মারকা-ই-হক’ বা ‘সত্যের যুদ্ধ’ হিসেবে। এই নামকরণ এসেছে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জবাবে পাকিস্তানের পরিচালিত ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস’ থেকে। সংঘাতের সূত্রপাত ২২ এপ্রিল, কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ সন্ত্রাসী হামলার পর।

   

পাক সেনার জনসংযোগ দফতর (ISPR) জানিয়েছে, ২২ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত যুদ্ধ পরিচালনায় “অটল সাহস, অসাধারণ সামরিক দক্ষতা, দৃঢ় বিশ্বাস ও অবিচল দেশপ্রেম” প্রদর্শনের জন্য আসিম মুনিরকে এই পদকে ভূষিত করা হয়েছে।

সেনা নেতৃত্বে পুরস্কারের বন্যা Pak army chief awards himself medal

বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জাহির আহমেদ বাবর সিদ্দিকি এবং নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরফ পেয়েছেন ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ’ (মিলিটারি)। যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকেও দেওয়া হয়েছে একই সম্মান।

এ ছাড়া আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ আসিম মালিক, আইএসপিআর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী, নৌবাহিনীর অপারেশন প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল রাজা রব নবাজ, বিমানবাহিনীর অপারেশন প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল আওরঙ্গজেব আহমেদ এবং সামরিক গোয়েন্দা প্রধান মেজর জেনারেল ওয়াজিদ আজিজ—সবাইকে দেওয়া হয়েছে ‘হিলাল-ই-ইমতিয়াজ’।

এছাড়াও সেনা সদস্যদের মধ্যে বিতরণ হয়েছে ৮টি ‘সিতারা-ই-জুরত’, ৫টি ‘তামঘা-ই-জুরত’, ২৪টি ‘সিতারা-ই-বিসালত’, ৪৫টি ‘তামঘা-ই-বিসালত’, ১৪৬টি বিশেষ প্রশংসাপত্র এবং ২৫৯টি সেনাপ্রধানের প্রশংসা কার্ড।

রাজনৈতিক নেতৃত্বেও পদকবৃষ্টি

সবচেয়ে বেশি আলোচনার জন্ম দিয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের পুরস্কার প্রাপ্তি। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পেয়েছেন পাকিস্তানের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ’—যুদ্ধকালীন নেতৃত্বের জন্য। একই পদক পেয়েছেন উপ–প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার, যিনি ভারতের “কূটনৈতিক আক্রমণ প্রতিহত” এবং আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের অবস্থান জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন বলে দাবি করা হয়েছে।

Advertisements

প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার, আইনমন্ত্রী আজম নজির তারার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি—প্রত্যেকেই এই পদকে ভূষিত হয়েছেন।

পিপিপি প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, যিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাকেও দেওয়া হয়েছে ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ’। নিউ ইয়র্ক, লন্ডন ও ব্রাসেলসে পাকিস্তানের পক্ষে সওয়াল করা সেই কূটনৈতিক দলের সদস্য—ড. মুসাদিক মালিক, সেনেটর শেরি রহমান, খুররম দস্তগীর, হিনা রব্বানি খার, সেনেটর ফয়সাল সুবজওয়ারি, তেহমিনা জানজুয়া ও জলিল আব্বাস জিলানিও পেয়েছেন ‘হিলাল-ই-ইমতিয়াজ’।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের দাবি, সেনা ও অসামরিক শীর্ষ নেতৃত্বকে একসঙ্গে পুরস্কৃত করার মাধ্যমে সরকার ও সেনা কর্তৃপক্ষ “ভারতের বিরুদ্ধে বিজয়” উদযাপন করতে চেয়েছে। তবে সমালোচকদের মতে, নিজেকে পদক প্রদান এবং রাজনৈতিক মহলকে সামরিক অভিযানের জন্য সম্মানিত করা পাকিস্তানের ইতিহাসে বিরল এবং তা স্বভাবতই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

 

World: In an unprecedented event on Pakistan’s Independence Day, Army Chief Field Marshal Asim Munir awarded himself the ‘Hilal-i-Jurat’—Pakistan’s second-highest gallantry award—for his leadership in the recent conflict with India, dubbed ‘Maraka-e-Haq’.