কলকাতা: কানাডার কানানাসকিসে অনুষ্ঠিত জি-৭ আউটরিচ সেশনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তুলে ধরলেন প্রযুক্তি, শক্তি, সন্ত্রাসবাদ ও বৈশ্বিক দক্ষিণের অগ্রাধিকারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো।
প্রযুক্তি ও শক্তির সমন্বয়
প্রধানমন্ত্রী মোদী উল্লেখ করেন, “এআই নিজেই শক্তি-নিবিষ্ট প্রযুক্তি। যদি প্রযুক্তি-নির্ভর সমাজের শক্তির চাহিদা টেকসইভাবে পূরণ করতে হয়, তবে তা নবায়নযোগ্য শক্তির মাধ্যমে সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, “ভারতের শক্তির দৃষ্টিভঙ্গি চারটি মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে৷ প্রাপ্যতা, প্রবেশযোগ্যতা, সাশ্রয়িতা এবং গ্রহণযোগ্যতা।” ভারতের নেট জিরো লক্ষ্য অর্জনের জন্য ২০৭০ সালের মধ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
ডিপফেক কনটেন্ট ও প্রযুক্তির নৈতিকতা Modi G7 Speech
ডিপফেক কনটেন্টের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ডিপফেক একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। তাই, এআই-সৃষ্ট কনটেন্টে ওয়াটারমার্কিং বা স্পষ্ট ঘোষণা থাকা উচিত।” তিনি আন্তর্জাতিকভাবে এআই-এর সুরক্ষা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য শক্তিশালী গভার্নেন্স কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
সন্ত্রাসবাদ ও আন্তর্জাতিক নীতি
পহেলগাঁও-এ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর ভারতের অপারেশন সিঁদুর-এর প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “যে কোনো দেশ সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করলে তাকে তার মূল্য চোকাতে হবে।” তিনি আন্তর্জাতিক দ্বিচারিতা নিয়ে সমালোচনা করে বলেন, ‘‘একদিকে আমরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করি, অন্যদিকে সন্ত্রাসবাদকে প্রকাশ্যে সমর্থনকারী দেশগুলোকে পুরস্কৃত করা হয়।’’
বৈশ্বিক দক্ষিণের কণ্ঠস্বর
প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেন, ‘‘ভারত বৈশ্বিক দক্ষিণের অগ্রাধিকারের প্রতিনিধিত্ব করতে দায়িত্বশীল।” তিনি আফ্রিকার উন্নয়নে ভারতের অবদানের কথা উল্লেখ করে গর্বিতভাবে বলেন, “জি-২০-এর সভাপতিত্বকালে আফ্রিকান ইউনিয়নকে স্থায়ী সদস্য করা হয়েছে।” ভারত উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তায় আফ্রিকার দেশগুলোর পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
জি-৭ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদির বক্তৃতা প্রযুক্তি, শক্তি, সন্ত্রাসবাদ ও বৈশ্বিক দক্ষিণের অগ্রাধিকারের সমন্বয়ে একটি সমন্বিত ও নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে। এটি ভারতের বৈশ্বিক নেতৃত্বের প্রতিফলন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।