কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে (Kashmir Bandh) সদ্য ঘটে যাওয়া ভয়াবহ জঙ্গি হামলার রেশ এখনও কাটেনি। সেই হামলায় একাধিক পর্যটকের মৃত্যু এবং বহু আহত হওয়ার ঘটনা সমগ্র দেশজুড়ে শোক ও ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। পুলওয়ামার পর এত বড় সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ উপত্যকায় আর দেখা যায়নি। এই ঘটনায় শুধু পর্যটন শিল্পই নয়, কাশ্মীরের (Kashmir Bandh) সাধারণ জীবনযাপনেও আবার ছায়া ফেলেছে আতঙ্ক।
এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জম্মু ও কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্সের পক্ষ থেকে আজ কাশ্মীর বন্ধ ডাকা হয়। আশ্চর্যজনকভাবে, এই বন্ধে রাজনৈতিক রং ছাপিয়ে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দেখা গিয়েছে। উপত্যকার রাস্তাঘাট ফাঁকা, বন্ধ দোকানপাট, যানবাহন চলাচল প্রায় অচল — পুরো কাশ্মীর যেন এক নিস্তব্ধ শোকস্তব্ধ জনপদে পরিণত হয়েছে।
আতঙ্কে ফিরছে কাশ্মীর(Kashmir Bandh)
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কাশ্মীর (Kashmir Bandh) ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছিল। পর্যটন শিল্প ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল। বহু বছর পর উপত্যকার হোটেল, গেস্টহাউস, হাউসবোট, ট্যুর গাইডদের মুখে দেখা গিয়েছিল আশার আলো। কিন্তু মঙ্গলবারের জঙ্গি হামলা সেই স্বাভাবিকতার রাস্তায় এক বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ‘‘ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করেছিলাম, কিন্তু আবার সব থেমে গেল। এই হামলায় শুধু নিরীহ প্রাণ নয়, ভেঙে গেল আমাদের স্বপ্নও।’’
পর্যটন শিল্পের উপর ঘোর বিপদ
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার (Kashmir Bandh) অন্যতম ভয়ঙ্কর দিক হল পর্যটকদের সরাসরি নিশানা করা। কাশ্মীরের মানুষের প্রধান জীবিকা পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল। শীত-গ্রীষ্মের ঋতু উপেক্ষা করেই হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসেন গুলমার্গ, সোনমার্গ, পহেলগাঁও বা শ্রীনগরে। কিন্তু এই হামলার পর অনেক পর্যটক কাশ্মীর সফর বাতিল করছেন, এমনকি হোটেল বুকিংও বাতিল হচ্ছে হু-হু করে।
এক হাউসবোট মালিক বলেন, “দু’বছর পর ঘরে ফিরেছিল আয়। এখন আবার শুন্য। কে আসবে এখানে?”
বন্ধে মানুষের মনের প্রতিফলন
আজকের বন্ধ শুধুই একটি রাজনৈতিক দলের আহ্বানে নয়, বরং কাশ্মীরবাসীর হৃদয় থেকে উঠে আসা প্রতিবাদের প্রতিফলন। যে নৃশংসতা উপত্যকার মাটিতে রক্ত ছড়িয়েছে, তার বিরুদ্ধে একযোগে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নামেননি তাঁরা, কিন্তু বন্ধে সামিল হয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
এক কলেজ পড়ুয়া বলেন, “আমরা আর সন্ত্রাস চাই না। স্বাভাবিক জীবন চাই। যেভাবে পর্যটকদের হত্যা করা হল, তা অমানবিক।”
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা (Kashmir Bandh) শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়, এটি কাশ্মীরের শান্তি ও সম্ভাবনার উপর এক নির্মম আঘাত। সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ, বন্ধে সাড়া এবং আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ— সব মিলিয়ে এটি কাশ্মীরের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। এখন প্রশ্ন একটাই— এই ভয়াবহ ঘটনার পর সরকার কী পদক্ষেপ নেবে? কবে ফিরবে কাশ্মীরের শান্তি? আর সেই উত্তরই খুঁজছে আজকের স্তব্ধ, শোকাহত, আতঙ্কিত কাশ্মীর।