ওয়াশিংটন: ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক নিয়ে তীব্র সমালোচনার সুর তুললেন আমেরিকার প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একসময়ের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সম্পর্ক আজ আর অবশিষ্ট নেই। আর সেই কারণেই দিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্কে তৈরি হয়েছে গভীর অস্বস্তি।
সতর্ক করলেন বল্টন
বল্টন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এলবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “ট্রাম্প আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে কেবল ব্যক্তিগত সমীকরণের মাধ্যমে দেখেন। তাঁর যদি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকে, তবে তিনি মনে করেন আমেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কও ভালো। অথচ বাস্তব মোটেই তা নয়।” তিনি সতর্ক করেন, ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সৌহার্দ্য কোনও বিদেশি নেতাকে তাঁর খারাপ সিদ্ধান্ত থেকে রক্ষা করতে পারে না।
প্রাক্তন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা উদাহরণ টেনে বলেন, “ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই ভালো ছিল। কিন্তু সেটি এখন অতীত। এটি এক বড় শিক্ষা—শুধু বন্ধুত্বের সম্পর্ক আপনাকে রক্ষা করবে না।” এই প্রসঙ্গে তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কথাও টেনে আনেন। আগামী ১৭ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর ট্রাম্পের ব্রিটেন সফরের প্রাক্কালে এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।
ভারতীয় আমদানির উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক John Bolton criticism India-US relations
সম্প্রতি ট্রাম্প ভারতীয় আমদানির উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন। এর সঙ্গে জুড়েছে হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা পিটার নাভারোর প্রকাশ্য আক্রমণ—যেখানে দিল্লির রাশিয়া-চিন ঘনিষ্ঠতাকে নিশানা করা হয়েছে। বল্টনের মতে, এই নীতির ফলে নয়াদিল্লিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে আবারও মস্কো ও বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠতায়। “আমেরিকার দুই দশকের প্রচেষ্টা ছিল ভারতকে মস্কোর প্রভাব থেকে দূরে সরিয়ে আনা এবং চিনকে প্রধান নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখতে রাজি করানো। কিন্তু ট্রাম্পের নীতিতে সেই প্রচেষ্টা এক ঝটকায় উল্টে গেল,” বলেন তিনি।
বল্টনের কথায়, এই পরিস্থিতি অবশ্যই বদলানো সম্ভব, তবে আপাতত ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, “হোয়াইট হাউস কয়েক দশকের অগ্রগতি নষ্ট করে দিয়েছে, যার ফলে মোদী আজ রাশিয়া ও চিনের আরও কাছাকাছি।”
অন্যদিকে, সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী কোনও দেশের চাপ অস্বীকার করেছেন। নাম না করে ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে তিনি জানান, “অপারেশন সিন্দূর বন্ধ করার জন্য কোনও বিশ্বনেতাই ভারতকে বলেননি।” এই বক্তব্য কার্যত মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই দাবি খারিজ করে দেয়, যেখানে তিনি বহুবার উল্লেখ করেছিলেন যে মে মাসে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ তিনি থামিয়েছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে বল্টনের সতর্কবার্তা স্পষ্ট, ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সম্পর্কের রাজনীতি দিল্লি-ওয়াশিংটনের দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক সমীকরণকে নতুন করে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
World: Former US National Security Advisor John Bolton sharply criticizes India-US relations, stating the close personal bond between PM Modi and Donald Trump has vanished, creating discomfort. He warns personal friendships don’t protect foreign leaders from poor decisions.