দীর্ঘদিন ধরে ভারত দাবি করে এসেছে যে, পাকিস্তান শুধু সন্ত্রাসকে আশ্রয়ই দেয় না, বরং রাষ্ট্রীয় মদতে তা লালন করে। এবার সেই অভিযোগেই সিলমোহর পড়ল৷ খোদ জইশ-ই-মহম্মদের এক শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসবাদী কবুল করে নিলেন সেই কথা। মাসুদ ইলিয়াস কাশ্মীরীর এক ভিডিয়োয় পাকিস্তানের বক্তব্যকে চূর্ণ করে দিয়ে পরিষ্কার জানিয়ে দিল, মাসুদ আজহারই পাকিস্তানে বসে দিল্লি ও মুম্বইয়ে হামলার ছক কষেছিল।
আজহারের ঘাঁটি ও ভারতের স্ট্রাইক
কাশ্মীরীকে ওই ভিডিয়োতে বলতে শোনা গিয়েছে, “তিহারের জেল থেকে মুক্তি পেয়ে পাকিস্তানের বালাকোটে ঘাঁটি গড়ে তোলে আমির-উল-মুজাহিদিন মাসুদ আজহার। সেখান থেকেই চালাতেন তাঁর ভিশন, মিশন আর প্রোগ্রাম— দিল্লি আর বোম্বের (মুম্বই) বিরুদ্ধে।”
এই বক্তব্য একদিকে যেমন বালাকোটে ভারতের এয়ারস্ট্রাইকের যৌক্তিকতা প্রমাণ করেছে, তেমনই পাকিস্তানের কূটনৈতিক অবস্থানকেও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে৷
বাহাওয়ালপুরে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অভিঘাত JeM commander confession
কাশ্মীরী জানায়, ৭ মে বাহাওয়ালপুরে জৈশ সদর দফতর জামিয়া মসজিদ সুভান আল্লাহ-য় ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মাসুদ আজহারের পরিবারের সদস্যরা “টুকরো টুকরো” হয়ে গিয়েছিল। এটা ছিল পহেলগাঁও-এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জবাব, যেখানে ২৬ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। ভারতের বার্তা ছিল স্পষ্ট, “নতুন ভারত ঘরে ঢুকে মারতে জানে।”
সেনার ছত্রছায়ায় জঙ্গি রাজনীতি
আরও বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছে কাশ্মীরী। তার দাবি, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির নাকি নির্দেশ দিয়েছিলেন বাহাওয়ালপুরে নিহত জঙ্গিদের অন্ত্যেষ্টিতে জেনারেলদের উপস্থিত থাকতে। প্রকাশ্যে আসা ভিডিওতেও দেখা গিয়েছিল পাক সেনার শীর্ষকর্তারা জঙ্গিদের ‘রাষ্ট্রীয় মর্যাদা’য় শেষকৃত্যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ভারত তখনই কড়া ভাষায় বলেছিল— “এই ছবি পাকিস্তানের আসল চরিত্রের প্রতিচ্ছবি।”
দ্বিচারিতার মুখোশ খুলল
এবার পাকিস্তান আর কোনও কথা বলার জায়গায় নেই। একদিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বলে— সন্ত্রাসবাদীদের কোনও জায়গা নেই পাকিস্তানে। অন্যদিকে খোদ জৈশ কমান্ডারের মুখেই উঠে এল বালাকোট থেকে বাহাওয়ালপুর পর্যন্ত সন্ত্রাসের নকশা, আর তার পেছনে পাক সেনার ছায়া। ভারতের বহু দশকের অভিযোগ এবার প্রমাণ পেল সবচেয়ে শক্তিশালী সাক্ষ্যে— সন্ত্রাসবাদীদের স্বীকারোক্তিতে।