জম্মু: সন্ত্রাসযোগ সন্দেহে জম্মু পুলিশ ১৯ বছর বয়সি এক যুবককে গ্রেফতার (Jammu terror arrest) করেছে। পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত যুবক মূলত রিয়াসি জেলার বাসিন্দা হলেও গত কয়েক মাস ধরে জম্মুর বাথিন্ডি এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকছিলেন। দীর্ঘ নজরদারি এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বাহু ফোর্ট থানার একটি বিশেষ দল তাকে হেফাজতে নেয়।
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্তকে অনলাইনের মাধ্যমে চরমপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী করে তোলা হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, এনক্রিপটেড মেসেজিং অ্যাপ এবং বিদেশভিত্তিক কিছু নম্বরের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলে পুলিশের দাবি। তদন্তকারীদের অনুমান, পাকিস্তান এবং আরও কয়েকটি দেশের হ্যান্ডলারদের সঙ্গে ফোনে ও ইন্টারনেটে সংযোগ রেখে কোনও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পরিকল্পনা করছিল সে।
এই ঘটনার জেরে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (Bharatiya Nyay Sanhita – BNS)-এর ১১৩(৩) ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ধারা সরাসরি সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকা অথবা যোগসূত্র রাখার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বাহু ফোর্ট থানায় FIR নথিভুক্ত হওয়ার পরেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তল্লাশিতে অভিযুক্তের মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ এবং অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সব ডিভাইস ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। চ্যাট রেকর্ড, ব্রাউজিং হিস্ট্রি, কল লগ, ডিলিট করা ডেটা এবং সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপ খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারী সংস্থার মতে, ডিজিটাল ডিভাইসেই অভিযুক্তের সন্ত্রাসযোগ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মত, অনলাইনে চরমপন্থী প্রচারের ফলে তরুণদের র্যাডিকালাইজেশনের ঘটনা বাড়ছে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং গেমিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি নতুন সদস্য সংগ্রহ করছে এই ঘটনাও সেই ধারা অনুসরণ করে। তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন, কোনও সক্রিয় স্লিপার সেলের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল কি না।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের বাসস্থানে তল্লাশির সময় সন্দেহজনক একাধিক নথি এবং ডিজিটাল সূত্র উদ্ধার হয়েছে। তবে পুলিশ এখনই বিস্তারিত জানাতে রাজি নয়। কারণ তদন্তের স্বার্থে তথ্য গোপন রাখা হচ্ছে।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের এক উচ্চপদস্থ অফিসার বলেন, “ডিজিটাল র্যাডিকালাইজেশন এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তরুণদের লক্ষ্য করে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি যেভাবে অনলাইনে প্রভাব বিস্তার করছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা প্রতিটি সূত্রের খোঁজ নিচ্ছি এবং কোনও নেটওয়ার্ককে সক্রিয় হতে দেব না।”
অভিযোগ, বিদেশভিত্তিক হ্যান্ডলাররা তাকে বিভিন্ন নির্দেশ দিত। সেই নির্দেশ অনুযায়ী সে কোনও হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি একটি বৃহত্তর সাইবার-ভিত্তিক সন্ত্রাস নেটওয়ার্কের শাখা।
অভিযুক্তকে বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও কয়েকজনকে চিহ্নিত করা সম্ভব হতে পারে। মামলার তদন্ত দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে, এবং পুলিশ শীঘ্রই আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করতে পারে বলে সূত্রের খবর।
