পশ্চিম এশিয়ায় সম্প্রতি পরমাণু হামলার আতঙ্ক ছড়িয়েছে, যা যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের মধ্যে তীব্র উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। অভিযোগ উঠেছে, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে (Israel), অর্থাৎ ইজ়রায়েল ডিফেন্স ফোর্স (IDF) পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, যা ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী এলাকা ব্যাপক ধ্বংসের মুখে ফেলতে পারে। যদিও এই অভিযোগ এখনও নিশ্চিত হয়নি, তবে ইজ়রায়েলের সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি এবং কোনো ধরণের আনুষ্ঠানিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
১০০ করে থামল জীবন, প্রয়াত নোবেলজয়ী প্রাক্তণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার
চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর সিরিয়ার বন্দর শহর তার্তাসে ইজ়রায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) একটি বৃহৎ বিমান হামলা চালায়। ওই হামলায় বিস্ফোরণ এতটাই শক্তিশালী ছিল যে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে এবং এর পরপরই একটি ভূকম্পন অনুভূত হয়। এমন ধরনের বিস্ফোরণ যে সাধারণ বিমান হামলার জন্য নয়, তা সন্দেহজনক। বিস্ফোরণের ধাক্কা এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তা স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। এর পর থেকেই ইহুদি সেনার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের গুঞ্জন আরও জোরালো হতে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ধরনের বিস্ফোরণ যদি পরমাণু অস্ত্রের প্রভাবে ঘটে থাকে, তাহলে তার ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ হতে পারে। যদি এটি সত্যিই পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার হয়, তবে তার প্রভাব শুধুমাত্র সিরিয়ার তার্তাসে সীমাবদ্ধ থাকবে না। ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী বিশাল এলাকা তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হতে পারে, এবং তা মৃতদেহের স্তূপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যদি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার হয়, তাহলে এর ফলে দীর্ঘস্থায়ী তেজস্ক্রিয়তা ছড়াবে, যা ঐ অঞ্চলের পরিবেশ এবং মানব জীবনকে চিরকাল জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
শেখ হাসিনাকে ফেরত দেবে না ভারত, দাবি ইউনূসের উপদেষ্টার
ইজ়রায়েল এই বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি এবং তাদের সরকারের পক্ষ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। ইজ়রায়েল প্রায়ই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা তার শত্রুদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে, কিন্তু পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ব্যাপারে একেবারে নিরব রয়েছে। এই নিরবতা আন্তর্জাতিক মহলে বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, কারণ ইজ়রায়েল তার পরমাণু অস্ত্র সম্পর্কিত নীতি সম্পর্কে খুবই গোপনীয়তা বজায় রাখে এবং কখনোই এর ব্যবহার বা অস্তিত্বের স্বীকৃতি দেয়নি।
পশ্চিম এশিয়ায় দীর্ঘকাল ধরেই বিভিন্ন দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা রয়েছে। সিরিয়া, ইরান, ইজ়রায়েল, লেবাননসহ বিভিন্ন দেশ এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে শক্তিশালী প্রতিযোগিতা এবং শত্রুতাও রয়েছে। একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের আক্রমণ চালানো স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার যদি সত্যি হয়, তবে তা এই অঞ্চলে যুদ্ধের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে এবং পৃথিবীজুড়ে তার ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।
কৃষকদের ডাকা ধর্মঘটের জেরে স্তব্ধ রেল-যান চলাচল, বেকায়দায় জনজীবন
তবে, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন যে, এই ধরনের অভিযোগের পিছনে অনেক রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তাই, তেজস্ক্রিয়তার আশঙ্কা পুরোপুরি সত্যি কি না, তা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে, যেহেতু এই ধরনের ঘটনা আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য অত্যন্ত গুরুতর বিপদ সৃষ্টি করতে পারে, সেহেতু বিশ্ব সম্প্রদায়কে আরও তৎপর হয়ে কাজ করতে হবে যাতে এই ধরনের হামলা থেকে মানবতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।