ইরানের পরমাণু কেন্দ্র-তেল খনিতে ইজরায়েলের মিসাইল হামলার ছক, জরুরি বৈঠকে নেতানিয়াহু

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: চরম উৎকণ্ঠায় আছি। বিশ্ব কি ভয়াবহ পরমাণু বিস্ফোরণের মুখে দাঁড়িয়ে। যে কোনও সময় ইরানের (iran) উপর ইজরায়েলের (Israel)  প্রত্যাঘাত শুরু হবে।…

Israel_war

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: চরম উৎকণ্ঠায় আছি। বিশ্ব কি ভয়াবহ পরমাণু বিস্ফোরণের মুখে দাঁড়িয়ে। যে কোনও সময় ইরানের (iran) উপর ইজরায়েলের (Israel)  প্রত্যাঘাত শুরু হবে। দোহা  শহরের বিখ্যাত লুসাইল টাওয়ারের সামনে গাড়ি থেকে নামলাম। আসে পাশে অনেক বাংলাভাষী ঘুরছেন। তাদের সঙ্গে কথা হলো। এখানে প্রবাসী বাংলাভাষীদের বিরাট ব্যাপার। তারা বুঝতে পারছেন কী নিদারুণ পরিস্থিতি। গঙ্গা-পদ্মাপারের জনজীবনে তেমন উদ্বেগ দেখতে পাই না।  তারা কি বিপদ টের পাচ্ছেন না। তেলের দেশে যুদ্ধ লাগলে বাঙালির রান্নাঘরে মাছ ভাজা আদৌ হবে?

Kolkata 24×7 এর মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ সংবাদদাতা সুজানা ইব্রাহিম মোহনা। তিনি বিশ্ব রাজনৈতিক উত্থান পতনের অন্যতম কেন্দ্র কাতারের রাজধানী দোহা শহরে থাকেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর রিপোটার্জ পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে তুলে ধরেন।

   

ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে নামবে ইজরায়েল।এমনই ইঙ্গিত ক্রমশ জমাট বাঁধছে। ইজরায়েল বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ইরানের তেলের খনি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলার কথা ভাবছে। ইরানের তেল খনির উপর আক্রমণ সে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে পারে তেমনই বিশ্ব অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়তে চলেছে। ভারত, বাংলাদেশের মতো দেশগুলি যারা জ্বালানি তেল আমদানির উপর নির্ভর করে তাদের কাছে বড় অর্থনৈতিক ধাক্কা আসতে চলেছে।

একটি ছবি প্রকাশ করছে ইজরায়েল সরকার। তাতে দেখা যাচ্ছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভা ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক করছেন। আল জাজিরা জানাচ্ছে, এই বৈঠকেই স্থির হয়েছে ইরানের মিসাইল হামলার জবাব দিতে সে দেশের পরমাণু ঘাঁটিতেই পাল্টা মিসাইল হামলা চালাতে প্রস্তুত ইজরায়েল।

যে কারণে ইজরায়েল-ইরান সংঘর্ষ
ভূজরাজনৈতিক ও জাতি বিদ্বেষের কারণে ইজরায়েলি ও ফিলিস্তিনি দ্বন্দ্ব চলমান। প্যালেস্টাইনের গাজা অংশ থেকে গতবছর (২০২৩) ৭ অক্টোবর হঠাৎ ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন (জঙ্গি তালিকাভুক্ত) হামাস মিসাইল হামলার পাশাপাশি ইজরায়েলে ঢুকে গণহত্যা চালিয়েছিল। প্রত্যাঘাতে ইজরায়েলি সেনা গাজায় পাল্টা গণহত্যা চালায়। হামাসের মিত্র লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর (জঙ্গি তালিকাভুক্ত) ঘাঁটি ধংস করেছে ইজরায়েল। হামাস ও হিজবুল্লাহর প্রধানরা নিহত। এই দুই গোষ্ঠীর বন্ধু ইরান ক্ষুব্ধ। ইরান মিসাইল হামলা চালিয়েছে। এবার ইজরায়েলেন নিশানায় ইরান।

ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে। এই সংঘর্ষ এড়াতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে কাতার সরকার। তেলের দুনিয়া-আরব বিশ্ব অন্তর্ভুক্ত বাকি দেশগুলিও উদ্বেগে।কাতার কি এবার কিছু করতে পারবে, আমি নিশ্চিত নই। কারণ, ইজরায়েলের ক্ষোভ স্বাভাবিক। তাদের উপর দু দফায় ইরানের মিসাইল হামলা হয়েছে। প্রথমবার বহু চেষ্টা করে ইজরায়েলকে শান্ত করা গেছিল। এবার তারা প্রবল ক্ষুব্ধ।

মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) গভীর রাতে ইরানের মিসাইল হামলা হয়েছিল। ১৮০টির বেশি ইরানি মিসাইল ইজরায়েলের দিকে ছুঁড়েছিল ইরান। তবে এর সিংহভাগ আকাশেই ধংস করে দিয়েছে ইজরায়েল। এই হামলার পরে ইরান সরকার ঘোষণা করে ইজরায়েল যেন বেশি বাড়াবাড়ি না করে। এর জবাব দিতে ইরানের গ্যাস বা তেল খনি, সরাসরি ইরানের পারমাণবিক সাইটগুলিকে লক্ষ্য করে ইজরায়েলের মিসাইল উড়ে যাবে বলেই আশঙ্কা।

ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রী ইজরায়েল কার্টজ বলেছেন, মঙ্গলবার ইরান যে মিসাইল হামলা চালিয়েছে দ্ব্যর্থহীনভাবে সেটির নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন গুতেরেস। অভিযোগ, রাষ্ট্রসংঘ মহাসচিব ‘ইজরায়েল বিরোধী’ এবং ‘জঙ্গি’, ধর্ষক ও খুনিদের মদদদাতা। আগামী প্রজন্মের কাছে রাষ্ট্রসংঘ মহাসচিব কলঙ্কিত হিসেবে আখ্যায়িত হবেন।’ গুতেরেসকে নিষিদ্ধ করেছে ইজরায়েল।