Indonesia earthquake: ভূমিকম্পে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে জাভা, আহতের সংখ্যা বেড়ে ৭০০ পার

সোমবার ইন্দোনেশিয়ার(Indonesia) জাভায় তখন স্থানীয় সময় বিকেল ৪ টে বেজে ১৫ মিনিট, আচমকাই কেঁপে উঠল চারিপাশ। মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে পড়লো চারিপাশের বাড়ি, কাঁচের জানলা দরজা…

সোমবার ইন্দোনেশিয়ার(Indonesia) জাভায় তখন স্থানীয় সময় বিকেল ৪ টে বেজে ১৫ মিনিট, আচমকাই কেঁপে উঠল চারিপাশ। মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে পড়লো চারিপাশের বাড়ি, কাঁচের জানলা দরজা এমনকি দেওয়ালে পর্যন্ত চির ধরলো। ভয়ংকর ভূমিকম্পের(earthquake) কবলে পড়ল ইন্দোনেশিয়ার জাভা প্রদেশ। প্রথমে জখম হন ৩০০ এর বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন ২০ জন। তারপরেই যত সময় বাড়তে থাকে মৃত্যের সংখ্যার পাশাপাশি আহতের সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত এই ভূমিকম্পের ফলে আহত সংখ্যা বেড়ে তা ৭০০ পার হয়ে গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৬২ জন।

ভূমিকম্পের জেরে জাভা একপ্রকার স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা গতকাল থেকেই ব্যাহত হয়েছে। যোগাযোগের পথও বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ভূমিকম্পের তীব্রতার জেরে ঘরবাড়ি যেমন মাটিতে মিশেছে সেরকমই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাসপাতালগুলি। যার ফলে খোলা আকাশের নিচেই হাসপাতালের সামনে ত্রিপল পেতে জখম মানুষদের চিকিৎসা করছেন চিকিৎসকরা। রাস্তার ওপর ত্রিপল ও কাপড় বিছিয়ে সেখানে আহতদের শুইয়ে দেওয়া হয়েছে সেখানেই চলছে প্রাথমিক চিকিৎসা। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ফলে যাতায়াত পরিষেবা যথেষ্ট ব্যাহত হয়েছে যার ফলে বেশ কিছু জায়গায় প্রাথমিক চিকিৎসা টুকুও পাচ্ছেন না বহু আহত মানুষ।

সিয়ানজুর প্রশাসনের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল ইন্দোনেশিয়ার জাভা প্রদেশে যে ভূমিকম্প হয় তার তীব্রতা ছিল রিখটার স্কেলে ৫.৬। এই ভূমিকায় উৎস ছিল রাজধানীর জাকার্তা থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম জাভার সিয়ানজুরে। আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিম জাভার সিয়ানজুর অঞ্চলের মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পের কেন্দ্র। মাটির নিচের কম্পনের গভীরতা খুব একটা বেশি ছিল না কিন্তু মাটির ওপরে তার প্রভাব পড়েছে খুব বেশি।

ভূমিকম্পের প্রভাবে সিয়ানজুর অঞ্চলের ৪ টি স্কুল ভেঙ্গে পড়েছে ভেঙে পড়েছে ৫২ টি বাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক বহুতল। কাঁচের জানলা, দরজা এমনকি দেওয়ালে পর্যন্ত চির ধরেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাসপাতালগুলি। ভূমিকম্পের ফলে বিভিন্ন এলাকায় ধস নেমেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এই ধ্বংস স্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বহু মানুষ। যার ফলে মৃত ও জখমের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, ভেঙে পড়া বাড়ির নিচে চাপা পড়েই বেশিরভাগ মানুষের মৃত্যু হয়েছে,জখম হয়েছে অনেক মানুষ। একাধিক জায়গায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ায় জরুরী চিকিৎসক পরিষেবা প্রদান করতে পারছেন না ডাক্তাররা। এমনকি একসঙ্গে এত সংখ্যক মানুষ যখন হয়েছেন যে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীর পরিমাণ যথেষ্ট নেই। ভূমিকম্পের পর যখন রোগীদের হাসপাতালে আনতে অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আহতদের ট্রাকে করে,মোটরসাইকেলে করে, কেউ কেউ আবার কোলে করে নিয়ে এসেছেন চিকিৎসার জন্য।

ভূমিকম্পের পরে প্রশাসনের তরফ থেকে সতর্ক করা হয়েছিল যে আগামী বেশকিছু ঘন্টার মধ্যেই আবারো একবার ভূমিকম্পের আফটার শকে কাঁপতে পারে ইন্দোনেশিয়া। সেই আশঙ্কা মত সত্যিই ভূমিকম্পের দু’ঘণ্টায় প্রায় ২৫ টি আফটার শক রেকর্ড করেছে প্রশাসন। তবে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, আপাতত সুনামির কোন আশঙ্কা নেই।