রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে শনিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বক্তব্যকে কড়া ভাষায় প্রত্যাখ্যান করল ভারত। কাশ্মীর ও সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে ইসলামাবাদের অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক নাটক’ বলে আখ্যা দিয়ে নয়াদিল্লি সরাসরি অভিযোগ করেছে— পাকিস্তান এখনও সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে তা ঢাকতে ‘ভণ্ডামির আশ্রয়’ নিচ্ছে।
সন্ত্রাসবাদকে মহিমান্বিত করেছে পাকিস্তান
ভারতের তরফে কূটনীতিক পেতল গেহলট সরাসরি বলেন, “আজ সকালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আবারও সন্ত্রাসবাদকে মহিমান্বিত করার পথ বেছে নিয়েছেন। কিন্তু যতই নাটক বা মিথ্যা প্রচার হোক না কেন, বাস্তবতা আড়াল করা যাবে না।”
গাহলট রাষ্ট্রসংঘকে স্মরণ করিয়ে দেন, চলতি বছরের এপ্রিলে জম্মু ও কাশ্মীরে পর্যটক হত্যাকাণ্ডের পর নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তান-সমর্থিত সংগঠন ‘রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’-কে আড়াল করেছিল ইসলামাবাদ। তিনি কড়া ভাষায় বলেন, “যে দেশ ওসামা বিন লাদেনকে এক দশক ধরে লুকিয়ে রেখেছিল, সন্ত্রাস দমন যুদ্ধের ভান করে, সেই পাকিস্তান আজও একই ভণ্ডামির পথেই হাঁটছে।”
কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপন India Pakistan UN General Assembly
শরিফ অবশ্য অধিবেশনে পূর্বনির্ধারিত কায়দায় কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপন করেন। তিনি দাবি করেন, পাকিস্তান সবসময় কাশ্মীরিদের ‘আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার’ সমর্থন করবে এবং একদিন ‘ভারতের দমননীতি’ শেষ হবে। পাশাপাশি, শরিফ ভারতকে অভিযুক্ত করেন সিন্ধু চুক্তিকে স্থগিত রেখে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য। তাঁর কথায়, “সিন্ধু চুক্তি ভঙ্গ মানেই আমাদের কাছে যুদ্ধ ঘোষণার সমান।”
সত্য আড়ালের জায়গা নেই
প্রসঙ্গত, ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত এই জলবণ্টন চুক্তি এপ্রিল মাসে পহেলগাঁও সন্ত্রাস হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর স্থগিত রেখেছে নয়াদিল্লি। ভারতের অবস্থান স্পষ্ট— পাকিস্তানকে প্রথমে সীমান্তপারের সন্ত্রাস রোখার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, তবেই আলোচনায় ফেরার প্রশ্ন উঠবে।
ভারতীয় কূটনীতিকের বক্তব্যে প্রতিফলিত হয়েছে সেই কড়া বার্তা— সন্ত্রাসের রক্তাক্ত ইতিহাস বহনকারী পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মঞ্চে যতই নাটক করুক না কেন, সত্য আড়াল করার জায়গা আর নেই।