ইসলামাবাদ, ২৮ নভেম্বর: পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। আদিয়ালা জেলে বন্দী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের হত্যার গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত ইউনিট মোতায়েন করার। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (PTI) সতর্ক করে বলেছে, যদি খানকে অবিলম্বে তার পরিবারের সামনে না দেখানো হয়, তাহলে দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই গুজবের ফলে লক্ষ লক্ষ খানের সমর্থক রাস্তায় নেমে এসেছে, এবং রাজ্যের নীরবতা আরও সন্দেহের সৃষ্টি করছে। এদিকে, আর্মি চিফ জেনারেল আসিম মুনিরের নাম জড়িয়ে পড়েছে এই ষড়যন্ত্রের অভিযোগে, যা পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
জেল কর্তৃপক্ষ এই গুজবকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে খারিজ করেছে। রওয়ালপিন্ডি জেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইমরান জেলে আছেন, তার স্বাস্থ্য ভালো এবং কোনো স্থানান্তর হয়নি। তাকে চিকিৎসা সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেছে তারা। কিন্তু এই বিবৃতি সত্ত্বেও উত্তেজনা কমেনি। খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে আদিয়ালা জেলে বন্দী, যেখানে তিনি দুর্নীতি এবং অন্যান্য মামলায় ফাঁসানো হয়েছেন।
পিটিআই নেতারা বলছেন, গত ৪ নভেম্বর থেকে খানের সঙ্গে কোনো সাক্ষাৎ হয়নি, যা আদালতের নির্দেশের লঙ্ঘন। খানের কাজিন ড. উসমানও বলেছেন, জেলে তার জীবনযাত্রা ‘কঠোর’ এবং নির্যাতন চলছে। এই জেলটি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের জন্য কুখ্যাত, যা আরও সন্দেহ বাড়িয়েছে।
এদিকে, ২৮ নভেম্বর সকালে পাকিস্তান আর্মির উচ্চপর্যায়ের সভার পর ইসলামাবাদে অতিরিক্ত সেনা ইউনিট মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক্স-এ ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কে.পি. সিএম সোহাইল আফ্রিদি জেলের সামনে প্রটেস্ট করছেন এবং বলছেন, খানের নিরাপত্তা নিয়ে স্পষ্টতা না দেওয়া হলে ব্যাপক বিক্ষোভ হবে। তিনি আসিম মুনিরের ‘শাসনকে’ দায়ী করেছেন।
সাধারণ পাকিস্তানিরা প্যানিকে আছেন—এক্স-এ পোস্টগুলোতে বলা হচ্ছে, মুনির এবং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ‘অনিয়মিত’ ভ্রমণে দেশ ছেড়ে গেছেন, যা গুজবকে আরও জ্বালাময়ী করেছে। পিটিআই সমর্থকরা জেল আক্রমণের চেষ্টা করেছে, কিন্তু পুলিশ এবং রেঞ্জাররা বাধা দিয়েছে। রাজধানীতে রাতের বেলা ‘ইমরান খান জিন্দাবাদ’ স্লোগানে রাস্তা কাঁপছে, এবং বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ২০২৩-এর মে ৯-এর বিক্ষোভের মতো বড় হতে পারে।
