ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি কী আমেরিকান পরিবারগুলির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে ?

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি আমেরিকান পরিবারগুলোর ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছে আমেরিকান কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস। এই শুল্ক নীতির কারণে নিম্ন আয়ের পরিবারের…

Donald Trump

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি আমেরিকান পরিবারগুলোর ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছে আমেরিকান কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস। এই শুল্ক নীতির কারণে নিম্ন আয়ের পরিবারের ক্রয়ক্ষমতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে এবং সাধারণ আমেরিকানরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে  মনে করা হচ্ছে।

ট্যাক্স ফাউন্ডেশন একটি বিশ্লেষণে জানিয়েছে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে ২০২৫ সালে গড়ে প্রতি আমেরিকান পরিবারকে অতিরিক্ত ৮৩০ ডলার শুল্ক দিতে হবে। এটি এমন এক পরিমাণ যা সামগ্রিকভাবে মার্কিন অর্থনীতির ওপর চাপ ফেলতে পারে এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনেও সমস্যা সৃষ্টির কারণ হতে পারে।

   

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে এসেছেন। তার নির্বাচনী প্রচারণায় এ বিষয়ে তিনি বহুবার কথা বলেছিলেন, এবং ৩১ শে জানুয়ারি থেকে তিনি মেক্সিকো এবং কানাডার ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন। ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি চীনের আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ১০% শুল্ক আরোপ করার পরিকল্পনা করেছেন।

ট্রাম্প বলেছেন, “এটি এমন কিছু যা আমরা করছি, এবং সম্ভবত এটি খুব বড়ভাবে বাড়ানো হবে, অথবা, আমরা দেখব কীভাবে হয়, তবে এটি যুক্তরাষ্ট্রে অনেক অর্থ নিয়ে আসবে।”

এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি যদি চান, তবে ব্রিকস দেশগুলির ওপর ১০০% শুল্ক আরোপ করতে পারেন। বিশেষ করে যদি তারা তাদের নিজস্ব মুদ্রা তৈরি করে এবং ডলারের বিকল্প হিসেবে তা ব্যবহারের চেষ্টা করে।

যদিও ট্রাম্পের শুল্ক নীতি কিছু অর্থনৈতিক সুবিধা আনতে পারে। তবে ট্যাক্স ফাউন্ডেশন এর বিশ্লেষণে জানিয়েছে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি ২০২৫ থেকে ২০৩৪ সালের মধ্যে দেশের অর্থনৈতিক আউটপুটকে ০.৪% কমিয়ে দিতে পারে এবং ১.২ ট্রিলিয়ন ডলার শুল্ক বৃদ্ধির কারণ হবে। এর পাশাপাশি শুল্ক আরোপের ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মার্কিন অর্থনৈতিক লাভগুলিও হুমকির মুখে পড়বে।

ট্রাম্পের প্রথম প্রশাসনে এবং বাইডেন প্রশাসনের শুল্ক নীতি বাস্তবায়নের পর, মার্কিন অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ট্রাম্প প্রশাসন প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার নতুন শুল্ক আরোপ করেছিল। যা সামগ্রিকভাবে আমেরিকান পরিবারগুলির খরচ বাড়িয়েছে। বাইডেন প্রশাসনও কিছু শুল্ক বাড়িয়েছে এবং ২০২১ সালের মে মাসে চীনের ১৮ বিলিয়ন ডলার পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার ফলে ৩.৬ বিলিয়ন ডলার শুল্ক বাড়ানো হয়েছে।

এই শুল্কের কারণে মার্কিন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। কর্মসংস্থান হ্রাস পেয়েছে এবং মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, ট্রাম্প এবং বাইডেন উভয়ের শুল্ক নীতি দেশের অর্থনীতির জন্য ” নেতিবাচক প্রভাব” ফেলেছে।

কংগ্রেসনাল বাজেট অফিসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, শুল্কের কারণে ভোক্তা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি হবে। তবে তারা এই শর্তেও বলেছেন যে, ২০২৫ সালের পর শুল্কের প্রভাব মূল্যবৃদ্ধিতে অতিরিক্ত কোনো বড় প্রভাব ফেলবে না।

মোটকথা ট্রাম্পের শুল্ক নীতি মার্কিন পরিবারগুলোর জন্য একটি বড় অর্থনৈতিক চাপ হিসেবে দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যারা নিম্ন আয়ের এবং যারা দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য নির্ভরশীল।