B Virus: ছড়াচ্ছে নতুন ভাইরাস! সঠিক চিকিৎসা না হলে হতে পারে মৃত্যু

করোনা ভাইরাসের দাপটে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল গোটা বিশ্ব। প্রচুর মানুষের মৃত্যুও হয়। এছাড়া বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাও দেখা দেয় অনেকের মধ্যে। করোনার রেশ কাটতে না কাটতেই…

B-Virus

করোনা ভাইরাসের দাপটে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল গোটা বিশ্ব। প্রচুর মানুষের মৃত্যুও হয়। এছাড়া বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাও দেখা দেয় অনেকের মধ্যে। করোনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ভয় ধরাচ্ছে আরেক ভাইরাস। এর নাম বি ভাইরাস (B Virus) বা বি মাঙ্কি ভাইরাস। মূলত বাঁদরের থেকে ছড়ায় এই ভাইরাস। হংকংয়ের এক ব্যক্তির শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। ৩৭ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে আক্রমণ করেছিল একটি বাঁদর। তার দেহ থেকেই মানবদেহে প্রবেশ করে এই ভাইরাস, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।

সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক চলতি মাসের শুরুতে মানবদেহে বি ভাইরাসের উপস্থিতির খবর পায়। মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সেন্টার ফর হেলথ প্রোটেকশন (CHP) বি ভাইরাসের মানব সংক্রমণের ঘটনা খতিয়ে দেখছে, একে হার্পিস সিমিয়া ভাইরাসও বলা হয়। CHP-র মতে, এটি মানবদেহে বি ভাইরাস সংক্রমণের প্রথম কেস হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং জাপানে এই জাতীয় রোগীর সন্ধান মিলেছে। প্রধানত বাঁদরের কামড় বা আঁচড়ের ফলে এই ভাইরাস মানবদেহে ঢুকে পড়ে। তবে এক আক্রান্তের থেকে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা বিরল।

   

রোগীর পরিবারের মতে, ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে কাম শান কান্ট্রি পার্কে যাওয়ার সময় রোগীকে একটি বাঁদর আক্রমণ করে। জ্বর সহ একাধিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় ২১ মার্চ তাঁকে ইয়ান চাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তারদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁর সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইডের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ইয়ান চাই হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইডের নমুনায় বি ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। আপাতত তিনি আইসিইউ-তে ভর্তি রয়েছেন এবং তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সিএইচপি মুখপাত্র বলেছেন, বি ভাইরাস প্রাকৃতিকভাবে হংকংয়ের বন্য বাঁদরের দেহে পাওয়া যায়। বাঁদরের লালা, প্রস্রাব এবং মলের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায়। এই ভাইরাস সংক্রমণের ফলে প্রাথমিকভাবে জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দিলেও পরে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে।

বি ভাইরাস কী?

বি ভাইরাস, মাঙ্কি বি ভাইরাস বা হার্পিস সিমিয়া ভাইরাস নামেও পরিচিত। এটি এক ধরনের সিমপ্লেক্স ভাইরাস যা ম্যাকাক বাঁদরকে সংক্রমিত করে। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে, বি ভাইরাসের সংক্রমণ খুব বিরল ঘটনা। তবে সময়মতো চিকিৎসা না করা হলে এর ফলে মস্তিষ্কের গুরুতর ক্ষতি বা মৃত্যু হতে পারে।

সংক্রমিত ম্যাকাক বাঁদর কামড়ালে বা আঁচড় দিলে কিংবা বাঁদরের চোখ, নাক বা মুখের সংস্পর্শে থাকলে মানুষও বি ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।

সিডিসি-র দাবি, একজন মানুষের থেকে অন্যজনের দেহে বি ভাইরাস সংক্রমণের মাত্র একটি কেস দেখা গিয়েছে। বি ভাইরাসের মানব সংক্রমণের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর এবং ঠান্ডা লাগা, পেশীতে ব্যথা, ক্লান্তি এবং মাথাব্যথা। এর পাশাপাশি শরীরে ক্ষত বা ফোসকাও হতে পারে। শরীরের কোনও অংশ বি ভাইরাসের (বাঁদরের) সংস্পর্শে এলে ওই জায়গাটি দ্রুত ধুয়ে ফেলতে হবে এবং আলতোভাবে ঘষতে হবে। ক্ষতস্থানে 15 মিনিটের জন্য সাবান, ডিটারজেন্ট বা আয়োডিন ব্যবহার করা উচিত।

এর পর 15 থেকে 20 মিনিট বা তারও বেশি সময় ধরে ক্ষতের উপর জলের ঝাপটা দিয়ে হবে। উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য একজন ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। বি ভাইরাসের সংক্রমণের ঘটনা ঘটলে মূলত অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে।