ভারতের ঐতিহাসিক রকেট অভিযান দুবাইয়ের রাজপথে

সাউন্ডিং রকেট (Sounding Rocket) হল এক বা দুই পর্যায়ের কঠিন প্রপেলান্ট রকেট যা উচ্চ বায়ুমণ্ডলীয় অঞ্চল অনুসন্ধান এবং মহাকাশ গবেষণার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই রকেটগুলি…

সাউন্ডিং রকেট (Sounding Rocket) হল এক বা দুই পর্যায়ের কঠিন প্রপেলান্ট রকেট যা উচ্চ বায়ুমণ্ডলীয় অঞ্চল অনুসন্ধান এবং মহাকাশ গবেষণার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই রকেটগুলি লঞ্চ যানবাহন এবং উপগ্রহগুলিতে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে নতুন উপাদান বা সাবসিস্টেমগুলির পরীক্ষা বা প্রোটোটাইপ প্রমাণের জন্য সহজে সাশ্রয়ী মূল্যের প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করে। ১৯৬৩ সালের ২১ শে নভেম্বর কেরলের তিরুবনন্তপুরমের কাছে থুম্বা (Thumba) থেকে প্রথম সাউন্ডিং রকেটের (Launch of first sounding rocket) উৎক্ষেপণ ভারতীয় মহাকাশ কর্মসূচির (Indian Space Programme) সূচনা করে। ৬০ বছর পরেও ভারতের সেই ঐতিহাসিক রকেট লঞ্চকে মনে রেখেছেন আজমল। ১৯৬৩ সালের রকেট লঞ্চকে শ্রদ্ধা জানালেন দুবাইবাসী আজমল মেহমুদ।

India’s first historic rocket launch in 1963

Dubai Ride কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে ১৯৬৩ সালের ঐতিহাসিক রকেট লঞ্চকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা জানালেন দুবাইবাসী আজমল মেহমুদ (Ajmal Mahamood)। সাদা রঙের শার্ট এবং ছাই রঙের প্যান্ট পড়ে সাইকেল সওয়ারি আজমল। সাইকেলে লাগানো রয়েছে শঙ্কুর মত এক বস্তু। ১৯৬৩ সালে লঞ্চের আগে কেরলের থুম্বায় ভারতের প্রথম স্পেস রকেট ঠিক এই ভাবেই সাইকেলে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আজমলের সাইকেলের বস্তুটি ভারতের প্রথম মহাকাশ রকেটের আইকনিক প্রতিরূপ। আজমল জানান, “আমি একজন কেরলবাসী এবং আমি আমার দেশ এবং সেখানের নাগরিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চাই।“

   

আজমল আরও বলেন, “মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে সাইকেল। এবং কী ইতিহাস বদলে দেওয়ার মতন রকেট লঞ্চ কর্মসূচিতেও করা হয়েছে সাইকেলের ব্যবহার। ৩১ বছরের আজমল, যিনি দুবাই-ভিত্তিক প্রযোজক, শ্রদ্ধা জানিয়ে ১২-কিলোমিটারের দুবাই রাইড সফলভাবে শেষ করেন।

এই বছরই দুবাই রাইডে অংশগ্রহণ আজমলের প্রথম নয়। ২০২০ সাল থেকে এই কর্মসূচি শুরু হওয়া থেকেই আজমল প্রতিবার অংশগ্রহণ করেন এবং প্রত্যেকবার কিছু না কিছু ইউনিক করে দেখান। যেমন এই বছর ভারতের রকেট লঞ্চকে শ্রদ্ধা। গত বছর আজমল তার বন্ধু রাজার সঙ্গে ব্লেন্ডার লাগানো সাইকেলে চড়ে এই কর্মসূচিতে এগিয়ে যান। সাইকেল যত প্যাডেল করা হয়েছে, ততটাই স্মুদি বা জুস তৈরি হয়েছে। বর্জন নিয়ে বার্তা দেওয়াই ছিল এই দুই বন্ধুর লক্ষ্য। ২০২০ সালে তার যাত্রা উৎসর্গ করেন করোনা অতিমারির নায়ক ডেলিভারি বয়দেরকে। স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখার জন্য তাদের প্রচেষ্টাকে অভিবাদন জানিয়ে তিনি সবজির ঝুড়ির তার সাইকেলটির উপর বসিয়েছিলেন।

থুমবা রকেট লঞ্চ নিয়ে আজমল অবাক হয়ে স্মরণ করিয়ে দেন যে কীভাবে একটি সাধারণ গ্রাম একটি রকেট লঞ্চের স্থল হয়ে উঠেছিল। এর কারণ গ্রামটি ছিল ম্যাগনেটিক ইকোয়েটরের খুব কাছে। সেই গ্রামেরই এক স্বেচ্ছায় দেওয়া চার্চকে রাতারাতি অফিস বানিয়ে দেওয়া হয়। গবাদি পশুর গোয়াল পরীক্ষাগারে রূপান্তরিত করা হয়। দেশের খুব কম ফান্ডিং দিয়েই তৈরি হয় থুম্বা ইকোয়েটরিয়াল রকেট লঞ্চিং স্টেশন বা টিইআরএলএস Thumba Equatorial Rocket Launching Station (TERLS)।

আজমলের শ্রদ্ধা শুধু দেশের ইতিহাসকে মনে করানো নয় কিন্তু খুবই অর্থবহ কথা সাধারণের কাছে তুলে ধরা। তার শ্রদ্ধার মাধ্যমে মনে করিয়ে দেয় ছোট ছোট জিনিসেরও কতটা বড় শক্তি হয়। ভারতের ২৩ শে আগস্ট ২০২৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রথম দেশ হিসাবে পা রাখার মাঝে ১৯৬৩ সালের রকেট লঞ্চ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।