রাখে খ্রিষ্ট মারে কে…কারা গুলি করল ট্রাম্পকে? মার্কিন প্রেসিডেন্ট খুন নতুন কিছু নয়

একটুর জন্য রক্ষা। বলা ভালো রাখে খ্রিষ্ট মারে কে? কানের কাছে গুলির আঘাতেও রক্ষা পেয়েছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট (Donald Trump) ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামলাকারীকে গুলি করে…

একটুর জন্য রক্ষা। বলা ভালো রাখে খ্রিষ্ট মারে কে? কানের কাছে গুলির আঘাতেও রক্ষা পেয়েছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট (Donald Trump) ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামলাকারীকে গুলি করে মেরেছে নিরাপত্তা বলয়ে থাকা স্নাইপার। ফলে হামলাকারীর আক্রমণের পিছনে রাজনৈতিক কোনও মদত আছে নাকি অন্য কোনও কারণ তা এখনো স্পষ্ট নয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট তকমাধারীদের হত্যার চেষ্টা:

   

থিওডোর রুজভেল্ট (1912), রোনাল্ড রেগান (1981), ডোনাল্ড ট্রাম্প (2024) কে খুনের চেষ্টা নথিভুক্ত হল আমেরিকার ইতিহাসে। এসব ঘটনায় হামলাকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছিল। ট্রাম্পকে গুলি করে খুনের চেষ্টার পিছনে কোন সংগঠন? কোন গোষ্ঠী? নাকি কোনও বিক্ষুব্ধ ব্যক্তির একক চেষ্টা? এমনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। হতবাক আমেরিকানরা। গোটা বিশ্ব চমকিত।

BBC জানাচ্ছে, দুবছর আগে ২০২২ সালে ঠিক একইভাবে নির্বাচনী জনসভায় খুন করা হয় জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে। তিনিও গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। ভাষণ দিচ্ছিলেন তিনি। তখনই পিছন থেকে গুলি করা হয়েছিল। মঞ্চেই লুটিয়ে পড়েন আবে। সেই ঘটনায় হামলাকারী আততায়ী ধরা পডেছিল। নির্বাচনী প্রচার করার সময় আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে গুলি করা হল। এবার হামলাকারী নিহত।

নির্বাচনী জনসভায় গুলিবিদ্ধ ট্রাম্পের কান থেকে রক্ত বের হওয়ার ছবি বিশ্বজুড়ে ভাইরাল। দেখা যাচ্ছে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে টেনে তুলছেন রক্ষীরা। তার কান থেকে রক্ত ঝরছে। কান ঘেঁষে লাগেনি হামলাকারীর গুলি, কানেই লেগেছে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন ট্রাম্প বিপদমুক্ত। যেভাবে জনসভায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করা হল তাতে নিরাপত্তার বড়সড় ফাঁক প্রকাশ্যে চলে এসেছে। মার্কিন মুলুকের জাতীয় নির্বাচনে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের তীব্র লড়াই।

BBC জানাচ্ছে, একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের ভাষণ শুনতে শুনতে দেখি আমাদের পাশের ভবনের ছাদে এক ব্যক্তি অগ্রসর হচ্ছে। তার কাছে একটা রাইফেল ছিল। আমরা পরিষ্কার সেটা দেখতে পাচ্ছিলাম। আমি ভাবছিলাম ট্রাম্প কেন এখনো বক্তব্য রাখছেন। তাকে কেন স্টেজ থেকে নামানো হচ্ছে না। তার দিকে দৃষ্টি দিয়ে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম। এরপর পাঁচটি গুলির শব্দ শুনতে পাই।

BBC আরও জানাচ্ছে, পেনসিলভানিয়ার বাটলারে রিপাবলিকান পার্টির হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তাঁর ভাষণ শুরুর পাঁচ মিনিট গুলির শব্দ শোনা যায়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সিক্রেট সার্ভিস সদস্যরা ট্রাম্পকে ঘিরে ফেলেন। তার কানে ও মুখের এক পাশে রক্ত দেখা গেছে। মঞ্চ থেকে নামিয়ে গাড়িতে ওঠানোর সময় তাঁকে মুষ্টিবদ্ধ হাত আকাশের দিকে তুলতে দেখা যায়। সিক্রেট সার্ভিস মুখপাত্র অ্যান্থনি গুগলিয়েলমি বলেছেন প্রেসিডেন্ট নিরাপদ এবং ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে।

মার্কিন মুলুকে একাধিক প্রেসিডেন্ট খুন হয়েছেন:

উনিশ ও বিংশ শতক জুড়ে আছে একের পর এক মার্কিন প্রেসিডেন্টকে গুলি করে খুনের ঘটনা। উনিশ শতকের গোড়ার দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের হত্যা, হত্যার চেষ্টা এবং ষড়যন্ত্র চলেছে। চারজন প্রেসিডেন্টকে হত্যা করা হয়েছে।
(ক) অ্যান্ড্রু জ্যাকসন (1835)
(খ) আব্রাহাম লিংকন (1865)
(গ) জেমস এ. গারফিল্ড (1881)
(ঘ) উইলিয়াম ম্যাককিনলে (1901)
(ঙ) জন এফ. কেনেডি (1963)

এবার একুশ শতকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উপর প্রাণঘাতী হামলার পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভোট প্রচারে আরও নিরাপত্তার কড়াকড়ি। ডেমোক্রাট দলের তরফে প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান পার্টির ডোনান্ড ট্রাম্পের উপর হামলার ঘটনায় সমবেদনা জানানো হয়। নির্বাচনে বাইডেন ও ট্রাম্প যুযুধান।