ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে তুর্কি ড্রোন, উদ্বেগ বাড়ছে ভারতের

পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সম্পর্কের উপর উদ্বেগের মাঝেই নতুন তথ্য উঠে এসেছে যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তুর্কি তৈরি TB-2 বায়রাক্তার ড্রোন ব্যবহার করছে এবং তা ভারতের…

Turkish-drone

short-samachar

পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সম্পর্কের উপর উদ্বেগের মাঝেই নতুন তথ্য উঠে এসেছে যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তুর্কি তৈরি TB-2 বায়রাক্তার ড্রোন ব্যবহার করছে এবং তা ভারতের সীমান্তের কাছে নজরদারি কার্যক্রম চালাচ্ছে। ভারতীয় সামরিক সূত্র জানিয়েছে গত কয়েক মাসে ভারতের সীমান্তের কাছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ড্রোনগুলি ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে এবং ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি সেগুলির ওপর নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।

   

বায়রাক্তার ড্রোনের কার্যক্রম

ভারতীয় সূত্র খবর এসব ড্রোন প্রায়ই বাংলাদেশের নিজস্ব ভূখণ্ডে ভারতের সীমান্তের দিকে উড়ানো হয়। বাংলাদেশি সেনাবাহিনী তাদের এলাকা সীমান্ত বরাবর বেশ কিছু নজরদারি মিশন পরিচালনা করেছে। কখনো কখনো এই TB-2 ড্রোনগুলি ২০ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে উড়ে গেছে, যা তাদের নজরদারি কার্যক্রমের দীর্ঘতর ব্যাপ্তির ইঙ্গিত দেয়। 

তুরস্কের তৈরি বায়রাক্তার TB-2 ড্রোন বিশ্বের অন্যতম সফল সামরিক ড্রোন হিসেবে পরিচিত। এটি মিডিয়াম অ্যালটিচুড লং এন্ডুরেন্স ড্রোন ক্যাটেগরিতে পড়ে এবং এতে এয়ার-টু-গ্রাউন্ড অস্ত্রও বহন করা সম্ভব। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সামরিক সংঘর্ষে এ ধরনের ড্রোন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে এবং এর মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত হামলা চালানো সম্ভব।

ভারতের নজরদারি

ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি জানান, তারা বাংলাদেশি ড্রোনগুলির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে এবং তাদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য সব ধরনের সতর্কতা গ্রহণ করেছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় রাডার সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে, যাতে ড্রোনগুলির কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখা যায়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। 

এছাড়াও ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশের সীমান্তে যেকোন ধরনের অনুপ্রবেশ বা নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য সতর্ক রয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর মতে ড্রোনের মাধ্যমে বাংলাদেশ তাদের সীমান্তের খুব কাছে নজরদারি চালানোয় ভারতীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে।

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সামরিক সম্পর্ক

বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসন, বিশেষত প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে, পাকিস্তানের সাথে তাদের সামরিক সম্পর্ক আরও গভীর করেছে। সম্প্রতি পাকিস্তানি সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বাংলাদেশে সফর করেছেন, এমনকি ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল চিকেন নেক করিডোরে (সিলিগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গ) তাদের উপস্থিতি দেখা গেছে, যা ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী সম্প্রতি পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তাদের বাংলাদেশে উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছিলেন “যে কোনো দেশ যদি আমাদের প্রতিবেশী হয়ে উঠে এবং তাদের কাছ থেকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের আশঙ্কা থাকে, তাহলে তা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক।”

ভারতের উদ্বেগ

ভারতের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের আশঙ্কা এবং বাংলাদেশের সীমান্তে পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের উপস্থিতি উদ্বেগজনক। বিশেষত যেহেতু পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করছে, তাই ভারতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে উদ্যোগী হয়েছে।

বাংলাদেশের এই সামরিক কার্যক্রম এবং তুর্কি ড্রোন ব্যবহারের পরিপ্রেক্ষিতে, ভারতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সম্পর্কের আরও জোরালো হওয়ার সম্ভাবনা এবং এর প্রভাব সম্পর্কে সতর্কতা জানিয়েছেন।