Bangladesh: শেখ মুজিবের বাড়ি ভেঙে ‘ঈদ মোবারক’ বলছেন হাজার হাজার জনতা, সেখানে হবে মসজিদ

বাংলাদেশের (Bangladesh) জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের বাসস্থান ঢাকার ৩২ নম্বর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বাড়ি গুঁড়িয়ে উল্লসিত জনতার চিৎকার ‘ঈদ মোবারক’। আসন্ন ঈদ উৎসবের আগেই অকাল…

Bangladesh

বাংলাদেশের (Bangladesh) জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের বাসস্থান ঢাকার ৩২ নম্বর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বাড়ি গুঁড়িয়ে উল্লসিত জনতার চিৎকার ‘ঈদ মোবারক’। আসন্ন ঈদ উৎসবের আগেই অকাল শুভেচ্ছা বিনিময় চলছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি)9 রাতে মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা ভারত থেকে ভাষণ দেওয়ার কিছু আগেই ওই ভবনটিতে পুনরায় হামলা শুরু হয়। বুলডোজার এনে ভেঙে দেওয়া শুরু হয় ঐতিহাসিক ভবনটি। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালেও ভাঙার কাজ চলছে। হাজার হাজার জনতা বাড়ি ভাঙছেন। তাদের অনেকেই ভেঙে পড়া বাড়িটির কড়ি বরগা, লোহার বিম যা পারছেন তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেক একটি করে ইঁট সংগ্রহ করছেন। তাদের দাবি, বাংলাদেশে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। স্বৈরাচারের প্রতীক হিসেবে ওই বাড়ির ইঁট সংগ্রহ করে রাখছি।

   

উল্লেখ্য গতবছর (২০২৪) ৫ আগস্ট রক্তাক্ত গণবিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যান মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা। সেদিনও শেখ মুজিবুর রহমানের ওই সংগ্রহশালা ভবনটিতে আগুন ধরানো হয়েছিল। সেই গণবিদ্রোহের ছয় মাসের মাথায় গত বুধবার রাতে ভাঙা শুরু হলো আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বহু আলোচিত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ভবনটি।

১৯৭১ সালে পাকিস্তান কেটে বাংলাদেশের জন্মের রাজনৈতিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত ঢাকার ৩২ নম্বর ধানমন্ডির এই বাড়ি। এই বাড়িতেই ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকারী সেনা অফিসাররা গুলি করে সপরিবারে খুন করেন বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে। শেখ মুজিবুরকে খুন বিশ্বের অন্যতম রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড।

বাংলাদেশে গতবছর গণবিদ্রোহে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন শেখ হাসিনা। অভিযোগ, তিনি গত ১৬ বছরের শাসনে স্বৈরাচার চালিয়েছিলেন। তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধেও স্বৈরাচারী একদলীয় শাসন চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। গতবছর গণবিদ্রোহোর পর থেকে বাংলাদেশে যে অন্তর্বর্তী সরকার চলছে তারা শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের কোনো সদস্যের নাম কোথাও রাখতে নারাজ। যদিও খাতায় কলমে এখনও (২০২৬, বৃহস্পতিবার ৬ আগস্ট) পর্যন্ত বাংলাদেশের ‘জাতির পিতা’ হিসেবে স্বীকৃত শেখ মুজিবুর রহমান।

‘জাতির পিতা’র বাসভবন ধংস করার প্রতিক্রিয়ায় শেখ হাসিনা বলেছেন, “ইতিহাস প্রতিশোধ নেয়, বঙ্গবন্ধু হৃদয়ে। দালান ভাঙলেও ইতিহাস মুছতে পারবে না।” তিনি বলেন, “লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে সংবিধান, স্বাধীনতা, পতাকা পেয়েছি— তা কয়েক জন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে পারবে না। এ শক্তি তাঁদের এখনও হয়নি। এটি তাঁদের দুর্বলতার প্রকাশ। তাঁরা দালান ভাঙতে পারে, কিন্তু ইতিহাসকে ধ্বংস করতে পারে না। ইতিহাস যে প্রতিশোধ নেয়। এ কথা তাঁদের মনে রাখতে হবে। যাঁরা এ সব করছেন, তাঁরা হীন মনের পরিচয় দিচ্ছেন। তাঁদের হয়তো বাংলাদেশের স্বাধীনতা পছন্দ নয়। পাকিস্তানিদের অধীনে থাকা এবং পদলেহন করাটাই হয়তো তাঁদের পছন্দ।”

বাংলাদেশ জামাত ইসলামির তরফে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার উসকানিকে দায়ী করছেন। তিনি লিখেছেন সার্বিক পরিস্থিতির জন্য পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার উসকানি মূলত দায়ী। মনে রাখতে হবে, শেখ হাসিনা কখনোই বাংলাদেশের মানুষকে অন্তরে ধারণ করে না। এটি তার ঘৃণিত স্বভাব।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ভাষণ সম্প্রচার করে তার দল আওয়ামী লীগের শাখা সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর থেকে এই সংগঠনটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত। বুধবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনার ভাষণ শুরুর কিছু আগে বৈষম্যমূলক ছাত্র আন্দোলন মঞ্চের নেতারা বুলডোজার নিয়ে ‘মার্চ টু ৩২ নম্বর ধানমন্ডি’ অভিযানের ডাক দেন। হাজার হাজার জনতা ওই বাড়িটি ঘিরে ভাঙচুরু শুরু করে দেন। রাতেই বাড়িটির একাংশ ভেঙে ফেলা হয়। জানা গেছে ওই স্থানে একটি মসজিদ গঠন করা হবে।