Sheikh Hasina: শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড মেরে খুনের ছক, আজ বিতর্কিত মামলার রায়

ভরা জনসভায় যখন এই হামলা হয়েছিল তখন শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ছিলেন বাংলাদেশের (Bangladesh) বিরোধী নেত্রী। তিনি ও তার দলের অভিযোগ, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট…

Sheikh Hasina

ভরা জনসভায় যখন এই হামলা হয়েছিল তখন শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ছিলেন বাংলাদেশের (Bangladesh) বিরোধী নেত্রী। তিনি ও তার দলের অভিযোগ, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার পুত্রর ষড়যন্ত্রে প্রকাশ্যে শেখ হাসিনাকে খুনের ছক করা হয়েছিল। চাঞ্চল্যকর সেই “২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা” (2004 Dhaka grenade attack) মামলার রায় রবিবার (১ ডিসেম্বর) বের হবে। রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশের সর্বত্র সতর্কতা জারি। তবে কুড়ি বছর আগের সেই নাশকতার পর হাসিনা হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এখন তিনি গণবিক্ষোভে ক্ষমতাচ্যুত ও ভারতে আশ্রিত।

দিল্লি থেকেই মামলার রায় শুনবেন ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা। টানা ১৫ বছরের শাসনে তার বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী তকমা নেগেছে। আর গত ৫ আগস্ট রক্তাক্ত গণবিক্ষোভে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর মুহাম্মদ ইউনূস নেত়ৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে মামলা চালাচ্ছে।

   

পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: একুশবার বেঁচেছেন হাসিনা, পাক মদতে হুজি-বি ষড়যন্ত্র ছিল ভয়াবহ

বিবিসি জানাচ্ছে, ২০০৪ সালের ২১শে অগাস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে দলটির নেতাকর্মীসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ কয়েকশো নেতাকর্মী।,ওই হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুইটি মামলা হয়। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত মামলা দুটির রায় দেন। রায়ে তৎকালী স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া তৎকালীন বিএনপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র ও দলটির  চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দেয় আদালত।

বিবিসি জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ২০১৮ সালে এটি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয় । অন্যদিকে, কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দুই মামলায় আলাদা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। ২১শে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) এবং  আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিলের ভিত্তিতে রবিবার (১ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণা হবে।

কী ঘটেছিল ২১ আগস্ট?
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের রক্তাক্ত গিন। এই দিনে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল। সেই সমাবেশ ঘিরে টানটান উত্তেজনা। সরকারে তখন বিএনপি জামাত ইসলামি জোট। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দিয়ে সবেমাত্র নামছিলেন। সেই সময় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। একের পর এক গ্রেনেড ছুঁড়তে থাকে হামলাকারীরা। মুহূর্তে মৃতদেহের স্তূপে পরিনত হয় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর সেই মঞ্চ সংলগ্ন এলাকা।

হামলায় অল্পের জন্যে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্রেনেড ও গুলিবৃষ্টি থেকে হাসিনাকে রক্ষা করতে তার দলীয় নেতা কর্মীরা মানবঢাল করেছিলেন। সেই মুহূর্তটি বিশ্বজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ফেলেছিল। সেই গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ আহত হন।

আওয়ামী লীগ সরকার চলাকালীন এই গ্রেনেড হামলার তদন্ত হয়। এতে দাবি করা হয় হামলার সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি জামাত ইসলামি জোট। তদন্তে উঠে এসেছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই মদতে হুজি-বি জঙ্গি সংগঠন এই হামলা চালিয়েছিল। তবে বরাবরই এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন খালেদা জিয়া।

বাংলাদেশে এখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ তুঙ্গে। একের পর এক দুর্নীতির মামলায় পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী  খালেদা জিয়া মুক্ত। আওয়ামী লীগ কোণঠাসা। বিএনপি ও জামাত ইসলামির প্রবল প্রতাপ।