টিভি সিরিয়াল দেখে খুনের টেকনিক শেখা। তারপর দেহ লোপাটের জন্য সিরিয়াল দেখেই বিভিন্ন পন্থা নেওয়া। গোপনে সেই দেহ পাচার করা সবই হয়েছিল সুচারুভাবে। জেরা করতে করতে চমকে যাচ্ছে পুলিশ। এভাবে খুনের (Murder) কারণ কী?
খুনের নতুন পদ্ধতি কি ঠাণ্ডা মাথায় কেটে টুকরো করা? তারপর দেহাংশ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিয়ে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা? এই প্রশ্ন ক্রমাগত ভাবাচ্ছে অপরাধ বিশেষজ্ঞদের। দিল্লির শ্রদ্ধা খুন বা পশ্চিমবঙ্গের বারুইপুর নিবাসী প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীকে কেটে টুকরো টুকরো করে দেহাংশ বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো হয়। একই প্রক্রিয়ায় এবার বাংলাদেশে (Bangladesh) এক শিশুকে কেটে ছয় টুকরো করে খুন করা হলো। খুনের অভিযোগে ধৃত কিশোরের স্পষ্ট স্বীকারোক্তি, ভারতের হিন্দি টিভি সিরিয়াল সিআইনি ও ক্রাইম পেট্রোল দেখে খুন করেছি।
নিহত শিশুর নাম আলিনা ইসলাম আয়াত। তার বয়স পাঁচ বছর। চট্টগ্রামের দক্ষিণ হালিশহর বন্দরটিলা নয়ারহাটে তার বাড়ি। পিতার নাম সোহেল রানা। দশদিন ধরে নিখোঁজ ছিল আলিনা।
নিখোঁজ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। শুক্রবার বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জানিয়েছে, দশ দিন আগেই আলিনাকে খুন করে তাদেরই বাড়ির ভাড়াটে আজহারুল ইসলামের ছেলে আবির আলি। শ্বাসরোধ করে খুনের পর মৃতদেহ প্যাকেটে মুড়িয়ে আরেক জায়গায় নিয়ে কেটে ছয় টুকরো করেছিল আবির। জেরায় আবির স্বীকার করেছে, দেহাংশ বঙ্গোপসাগরের জলে ও স্থানীয় খালে ছড়িয়ে দিয়েছিল।
আলিনার নিখোঁজ তদন্তে নেমে পুলিশের সন্দেহ হয় আবিরের অসংলগ্ন আচরণ ও কথাবার্তায়। তাকে আটক করা হয়। জেরায় আবির জানায় কীভাবে খুন করেছে। মৃত শিশু দেহাংশের খোঁজ মেলেনি। পুলিশের ধারণা, মৃতদেহের টুকরোগুলো বঙ্গোপসাগরে ভেসে গেছে।
জেরায় আবির স্বীকার করেছে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিশুটিকে অপহরণ করেছিল। কোথাও লুকিয়ে রাখতে না পেয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে দেহাংশগুলো তিনটি প্যাকেটে মুড়িয়ে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেয়। ভারতীয় টিভি শো ক্রাইম পেট্রোল ও সিআইডি দেখে এমন নৃশংস কৌশল রপ্ত করেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে আবির।