কলকাতা: আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। তারও আগে ‘প্রাক্তন’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত ঘিরে ঢাকার রাজনীতিতে তৈরি হল নতুন অস্থিরতা। বিরোধী দল বিএনপির অভিযোগ, এক গোপন চক্রান্তের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে, যাতে ফের ক্ষমতায় ফিরতে পারেন হাসিনা।
জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তোপ দেগে বলেন, “অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে নির্বাচন বানচালের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এমন সব দাবি তোলা হচ্ছে, যার সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ পরিচিত নয়। একাত্তরের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে, কিন্তু সেটি কোনোদিন সম্ভব নয়।”
তাঁর অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ। ফখরুলের দাবি, দিল্লিতে শেখ হাসিনার হাতে ইতিমধ্যেই আড়াই হাজার কোটি টাকা তুলে দিয়েছে এস আলম গ্রুপ। এর উদ্দেশ্য স্পষ্ট-সেই অর্থ ব্যবহার করে হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা এবং আসন্ন নির্বাচন বানচাল করা।
বিএনপির আরও দাবি, হাসিনা ও এস আলমের গোপন বৈঠকে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শুধু তাই নয়, অর্থ ব্যবহারের নির্দিষ্ট খাত নিয়েও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে সূত্রের দাবি। বিএনপি বলছে, দেশের গোয়েন্দা মহলের একাংশও এই চক্রান্তের ইঙ্গিত দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর অগাস্টা মাসে ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের জোয়ারে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে৷ দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার পর বিএনপি তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানায়। যা নিয়ে সমালোচনা থাকলেও ফখরুলের বক্তব্য, “যদি গণ-অভ্যুত্থানের তিন মাসের মধ্যেই নির্বাচন হতো, তবে আজকের অর্থনৈতিক সংকট এড়ানো যেত। নির্বাচিত সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বাইরের শক্তিকে প্রতিহত করতে পারত।”
আজ বাংলাদেশের সামনে এক জটিল সমীকরণ-একদিকে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অন্তর্বর্তী সরকার, অন্যদিকে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন ঘিরে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ। ফেব্রুয়ারির ভোট শুধু একটি নির্বাচন নয়, বরং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক পথরেখা নির্ধারণের লড়াই।