জনতার ভয়ে তৃণমূল প্রচারক ফেরদৌস ‘পলাতক’, অস্থির ঋতুপর্ণা কষ্ট পাচ্ছেন

কোথায় ফেরদৌস? কেউ জানে না। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণাও (Rituparna Sengupta) জানেন না তাঁর প্রিয়জন (Ferdous Ahmed) কোথায় লুকিয়ে আছে। বাংলাদেশে (Bangladesh) ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে…

Ferdous Ahmed, Rituparna Sengupta

কোথায় ফেরদৌস? কেউ জানে না। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণাও (Rituparna Sengupta) জানেন না তাঁর প্রিয়জন (Ferdous Ahmed) কোথায় লুকিয়ে আছে। বাংলাদেশে (Bangladesh) ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রিত শেখ হাসিনা। এরপরই ভেঙে দেওয়া হয় নির্বাচিত সংসদ। 

হাসিনার দেশত্যাগের কিছু আগে ও আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলটির মন্ত্রী-সাংসদ, নেতাকর্মীরাও দেশ ছেড়ে কেউ পলাতক, কেউ পালিয়ে যেতে গিয়ে ধৃত। কেউ গণরোষে নিহত। আর কেউ কেউ বাংলাদেশের ভেতরেই আত্মগোপনে। যারা লুকিয়ে আছেন তারা খুনের ভয় পাচ্ছেন। এই তালিকায় অন্যতম আওয়ামী লীগের নেতা, প্রাক্তন সাংসদ ও অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ। তিনি ঢালিউড ও টলিউড দুই সিনেমা মহলেই জনপ্রিয়। ভারতীয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর ঘনিষ্ঠ।

   

বাংলাদেশে গত জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসনের সংসদ হয়েছিলেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। তবে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে আছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিগত একমাসেও ফেরদৌসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি এই অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা। যে কারণে প্রিয় বন্ধুকে নিয়ে বেশ চিন্তিত তিনি। 

ফেরদৌস ও ঋতুপর্ণা প্রায় অর্ধশত ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। বাংলাদেশে গেলেই ফেরদৌসের বাড়িতে ঘুরতে যান ঋতুপর্ণা। কলকাতায় গেলে ফেরদৌস যান ঋতুপর্ণার বাড়িতে। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা বলেছেন, গত একমাস ধরে ফেরদৌসের খোঁজ পাইনি। তার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারও বন্ধ পাচ্ছি।  প্রত্যেকেই ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দল সমর্থন করতে পারেন। তবে মানুষ হিসেবে ফেরদৌস অসাধারণ। 

ঋতুপর্ণা বলেছেন, ব্যক্তি ফেরদৌস খুব নরম মানুষ। অসাধারণ তার ব্যক্তিত্ব। যারা তাকে কাছ থেকে দেখেছেন, এটা স্বীকার করবেন। আমি জানার বহু চেষ্টা করেছি সে এখন কেমন আছে, কোথায় আছে। কেউ যদি আমাকে জানাতে পারেন চিন্তামুক্ত হতাম। ওর জন্য খুব কষ্ট পাচ্ছি।

গত জুলাই ও আগস্ট মাস জুড়ে বাংলাদেশ ছিল রক্তাক্ত বিক্ষোভ। অভিযোগ, সেই বিক্ষোভ দমনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গুলি চালিয়ে বহু বিক্ষোভকারীকে খুন করা হয়েছে। রক্তাক্ত বিক্ষোভের সময় গত ৪ আগস্ট রাত পর্যন্ত ঢাকাতেই ছিলেন ফেরদৌস। বিক্ষোভকারীরা সরকারি টি়ভিত্তি চ্যানেল বিটিভি-ভবনে হামলা করেছিল। এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি। তবে ৫ আগস্ট সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে ফেরদৌসকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর মোবাইল নম্বরটি বন্ধ।

ফেরদৌস বাংলাদেশে নাকি অন্য দেশে তাও স্পষ্ট হয়নি। প্রথমে গুঞ্জন উঠেছিল ফেরদৌস গোপনে কলকাতায় গিয়ে ঋতুপর্ণার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।পরে অভিনেত্রী বলেন সবই রটনা। তিনি নিজেও ফেরদৌসের জন্য চিন্তিত বলে জানান। এদিকে ঢাকায় গুঞ্জন মোটা টাকার ঘুষ দিয়ে নিজেকে গোপনে রেখেছেন ফেরদৌস।

বাংলাদেশি অভিনেতা ফেরদৌসের জনপ্রিয়তা ব্যবহার করে তাঁকে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট প্রচারে নামিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তর দিনাজপুরে তিনি প্রচার করেছিলেন। বিদেশী নাগরিককে দিনে ভোট প্রচারের অভিযোগে তীব্র বিতর্কে জড়িয়েছিল তৃ়ণমূল ও দলটির নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারত সরকার কালো তালিকাভুক্ত করে ফেরদৌসকে তাড়ায়।