ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘিরে ফের জঙ্গি সংযোগের আতঙ্ক। পাকিস্তানের নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তইবা (LeT)-র প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইবতিসাম এলাহী জহিরকে সম্প্রতি বাংলাদেশে দেখা গিয়েছে। তাঁর সফরপথে একাধিক সীমান্তবর্তী জেলা-রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারী, থাকায় উদ্বেগ বেড়েছে ভারতীয় নিরাপত্তা মহলে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মহম্মদ ইউনূসের আমলে এটি জহিরের দ্বিতীয় সফর। গত ২৫ অক্টোবর তিনি ঢাকার শাহ মখদুম বিমানবন্দরে অবতরণ করেন এবং পরদিন থেকেই সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে ঘুরে ঘুরে উস্কানিমূলক ভাষণ দিতে শুরু করেন। নভেম্বরের ৬ ও ৭ তারিখে রাজশাহীর পবা উপজেলার ডাঙ্গিপাড়ায় একটি বৃহৎ সালাফি সম্মেলনে তাঁর যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সীমান্তে উস্কানিমূলক ভাষণ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেওয়া এক ভাষণে জহির বলেন, “ইসলামের জন্য তোমাদের নিজেদের ও সন্তানদের আত্মত্যাগে প্রস্তুত থাকতে হবে। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ-সব মুসলমানকেই ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।” তিনি আরও মন্তব্য করেন, “কাশ্মীরে মুসলমানদের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের দায়িত্ব হল এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা। আল্লাহর ইচ্ছায় কাশ্মীর একদিন পাকিস্তানের অংশ হবে।”
হাফিজ সইদ ও জাকির নায়েকের ঘনিষ্ঠ মিত্র Ibtisam Elahi Zahir Bangladesh Visit
ইবতিসাম এলাহী জহির পাকিস্তানের মারকাজি জামিয়াত আহলে হাদিস-এর সাধারণ সম্পাদক এবং দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তাঁর যোগাযোগ ছিল লস্কর-ই-তইবার সহ-প্রতিষ্ঠাতা আমির হামজা ও নিহত জঙ্গি নেতা আবদুর রহমান মক্কির সঙ্গেও। সম্প্রতি পাকিস্তান সফরে গিয়ে জাকির নায়েকের সঙ্গেও তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছে-যা দক্ষিণ এশিয়ায় সালাফি নেটওয়ার্ক আরও শক্তিশালী হওয়ার ইঙ্গিত বহন করছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশে উগ্রপন্থার পুনরুত্থান?
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ইউনূস প্রশাসনের সময়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে র্যাডিক্যাল গোষ্ঠীগুলির কার্যকলাপ পুনরায় সক্রিয় হচ্ছে বলে অভিযোগ। হাফিজ সইদের সহযোগীর এমন সফর তারই নিদর্শন হতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। বিশেষত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সংলগ্ন সীমান্তে উগ্রবাদী প্রচার এবং সংগঠিত নেটওয়ার্ক তৈরির প্রচেষ্টা নতুন করে মাথা তুলছে বলে আশঙ্কা।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত ইবতিসাম এলাহী জহিরের সফর নিয়ে কোনও সরকারি মন্তব্য করা হয়নি। তবে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে।


