সেনার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন: কেন ইউনূসকে সতর্ক করল খালেদা জিয়ার দল?

BNP Warns Yunus on Army Relations

ঢাকা: ঢাকায় সামরিক কর্মকর্তাদের সিভিল ট্রাইব্যুনালে বিচারের ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি) দেশের অস্থায়ী সরকার প্রধান মহম্মদ ইউনূসকে সতর্ক করেছে৷ তাঁদের বক্তব্য, দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা অপরিহার্য।

Advertisements

জরুরি বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “রাষ্ট্রকে সমন্বিত ও সমানুভূতিশীল অবস্থানে রাখতে হবে। আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না, কারণ তা দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।”

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আহ্বান

বিএনপি আরও জোর দিয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ অনুষ্ঠিত হতে চলা সাধারণ নির্বাচনের আগে দেশকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় রাখতে হবে।

বৈঠকটি আহ্বান করা হয়েছিল জুলাই চার্টার-এর প্রেক্ষিতে, যা ইউনূস সরকারের বিভিন্ন খাতে সংস্কার প্রস্তাবনা সম্বলিত। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ এবং সাম্প্রতিক আইনি পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্যাতনের অভিযোগ BNP Warns Yunus on Army Relations

গত সপ্তাহে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (ICT-BD) ১৬ জন সক্রিয় সেনা কর্মকর্তা এবং আরও ১৪ জন-সহ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। অভিযোগ, তাঁরা পূর্ববর্তী সরকারের সময় রাজনৈতিক বিরোধীদের জোরপূর্বক অপহরণ বা নির্যাতন করেছেন।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ১৬ জন কর্মকর্তার মধ্যে ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, একজন মেজর জেনারেল পালিয়ে গিয়েছেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা সেনাবাহিনীর হাতে না পৌঁছানোর কারণে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এই কর্মকর্তারা কি সিভিল আদালতে বিচার পাবেন, নাকি মিলিটারি কোর্ট-মার্শাল-এ?

Advertisements

অস্থায়ী কারাগার

সরকার ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের একটি ভবনকে অস্থায়ী কারাগার হিসেবে ব্যবহার করছে, এই পদক্ষেপ জনগণের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

জরুরি বৈঠকে অংশ নিয়েছে জামায়াত-ই-ইসলামী, ছাত্রনেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (NCP), এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (CPB)-সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।

ইউনূস প্রশাসন আওয়ামী লীগকে তাদের নেতাদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত ডিসব্যান্ড করেছে এবং নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন স্থগিত করেছে, ফলে আসন্ন নির্বাচনে তারা অংশ নিতে পারবে না।

জুলাই উত্তাল আন্দোলনের পরের পরিস্থিতি

বর্তমান উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটেছে জুলাই উত্তাল আন্দোলনের পর। ছাত্রনেতৃত্বাধীন এই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করে, এবং ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ICT-BD আইন সংশোধন করা হয় পূর্বতন সরকারের নেতাদের বিচারের প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য, যার প্রধান প্রসিকিউটর হিসেবে নিযুক্ত হন তাজুল ইসলাম।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি বাংলাদেশে সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।