Bangladesh: চিত্রশিল্পী থেকে মোস্ট ওয়ান্টেড বাংলাদেশি জঙ্গি নেতা নাথান বম ‘লুকিয়ে’ ভারতে?

বিস্তীর্ণ দুর্গম অরণ্যাঞ্চল। এই এলাকায় মিশে আছে ভারতের দুটি রাজ্য মিজোরাম ও ত্রিপুরা, বাংলাদেশের  পার্বত্য চট্টগ্রাম ও মায়ানমারের চিন (Chin) রাজ্য। সীমান্তরেখা যেখানে দুর্গম এলাকায়…

বিস্তীর্ণ দুর্গম অরণ্যাঞ্চল। এই এলাকায় মিশে আছে ভারতের দুটি রাজ্য মিজোরাম ও ত্রিপুরা, বাংলাদেশের  পার্বত্য চট্টগ্রাম ও মায়ানমারের চিন (Chin) রাজ্য। সীমান্তরেখা যেখানে দুর্গম এলাকায় হারিয়ে যায়, তার কোনদিকে কোন দেশ তার হদিস মেলা মুশকিল। এমনই এনাকার কুকি ও চিন দুই উপজাতি গোষ্ঠীর মিলিত একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী-জঙ্গি সংগঠন সক্রিয়। বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকারের গোয়েন্দা বিভাগের দাবি, ‘পাহাড়ি ভাই’ ছদ্মনামে চলা জঙ্গি কর্মকাণ্ডের মাথা এক উপজাতি ব্যক্তি নাথান বম। তার সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (KCNF)

বাংলাদেশ সেনবাহিনীর ইঙ্গিত, জঙ্গি দমন অভিযানের জেরে জঙ্গি নেতা নাথান বম ভারতের দিকে চলে গেছে।  ধারণা করা হচ্ছে, নাথান বম ভারতের মিজোরাম রাজ্য আত্মগোপন করেছে। সীমান্ত পার করে ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে এই জঙ্গি নেতার  অহরহ যাতায়াত চলে।

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ইঙ্গিত, জঙ্গিদের নির্মূল করা হবে। অভিযান চলছে। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের নতুন আতঙ্কে পরিণত হয়েছে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। এই সংগঠনটি  তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি করেছে এবং এক কর্মকর্তাকে অপহরণ করেছে। এর ফলে পাহাড় আবার অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

কে নাথান বম?
পুরো নাম নাথান লনচেও বম।  কেএনএফ সংগঠনের প্রধান। ১৯৯৬ সালে নাথান বম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ছাত্র। চারুকলা শিল্পী হবার বাসনা ছিল বাংলাদেশের বম নৃ-গোষ্ঠীর নাথানের।

বাংলাদেশ পুলিশের জঙ্গি দমন শাখা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) তথ্য অনুযায়ী চারুকলা বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় নাথান বমের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শামিন মাহফুজের। এখন শাহিন জামাতুল আনসার নামে এক জঙ্গি সংগঠনের নেতা। দুজনের মিলিত উদ্যোগে চলছে জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির। এই শিবিরে যারা থাকে তাদের বিশেষ পরিচয় ‘পাহাড়ি ভাই’। নাথান বমের সাথে ২০২১ সালে জামাতুল আনসারের সমঝোতা হয়। সেই সমঝোতার ভিত্তিতে দুই গোষ্ঠীর জঙ্গি শিবির চলেছে।

জাতি সংঘর্ষে বারবার রক্তাক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম:
পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী পারস্পরিক সংঘর্ষে লিপ্ত থাকে। এতে পর্যটন সমৃদ্ধ এলাকাটি বারবার রক্তাক্ত হয়।

Chittagong_Hill_Tracts_Peace_Accord

১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বাংলাদেশ তৈরির পর পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিরা স্বশাসনের দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলনে নেমেছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি গঠিত হয়। টানা রক্তাক্ত সংঘর্ষের পর সেই সংগঠনটির নেতা জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকারে সাথে শান্তি চুক্তি করেন। ততকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেন সন্তু লারমা। এটি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি (Chittagong Hill Tracts Peace Accord ) নামে পরিচিত। পরে এই জনসংহতি সমিতি ভেঙে একাধিক পার্বত্য উপজাতি সংগঠন তৈরি হয়। তাদের মধ্যে পারস্পরিক সংঘাতে আগেও গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে।