Rat Business: এত অর্ডার! ইঁদুর পুষে লাখপতি মামুন

ইঁদুর আনছে টাকা। এত এত অর্ডার যে নেওয়াই যাচ্ছে না সব। বিক্রির বহরে নিজেই চমকে গেছেন ইঁদুর ব্যবসায়ী মামুন। ইঁদুর বিক্রি (Rat Business) করে বছরে…

ইঁদুর আনছে টাকা। এত এত অর্ডার যে নেওয়াই যাচ্ছে না সব। বিক্রির বহরে নিজেই চমকে গেছেন ইঁদুর ব্যবসায়ী মামুন। ইঁদুর বিক্রি (Rat Business) করে বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করা যায় সেটাই করে দেখিয়েছেন বাংলাদেশের সালাউদ্দিন মামুন। তিনি রাজশাহীর বাসিন্দা।

শুরুতে শখের বসে ইঁদুর পোষা শুরু করেছিলেন মামুন। এখন পুরো একটি খামার গড়ে তুলেছেন। পাঁচ বছর আগে মাত্র চারটি সাদা ইঁদুর পোষা শুরু করেছিলেন তিনি। এখন তার খামারে রয়েছে ৩০০ টির বেশি পূর্ণবয়স্ক ইঁদুর। এগুলো তিন থেকে চার সপ্তাহ পর পর একসাথে কয়েকটি করে বাচ্চা দিয়ে থাকে। এদের বাচ্চাগুলো ২০ দিনের মধ্যেই পূর্ণবয়স্ক হয়ে যায়।

   

শুরুর দিকে প্রতিটি ইঁদুর ৪০ টাকা দরে বিক্রি করতেন মামুন। এখন তিনি প্রতিটি ইঁদুর বিক্রি করেন ১২০ টাকা করে। একটি পূর্ণ বয়স্ক ইঁদুরের পিছনে ব্যয় হয় মাত্র ৩০-৪০ টাকা‌। প্রতি মাসে ৪০০ থেকে ৫০০ টির মতো ইঁদুর বিক্রি করে থাকেন।  এতে তার মাসে আয় হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকার অধিক। শুধু দেশে নয় বিদেশ থেকেও মামুনের কাছে আসে ইঁদুরের অর্ডার। কিন্তু আইনগত সুবিধা না থাকায় বিদেশে পাঠাতে পারছেন না সেগুলো। ইঁদুর সাধারণত বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া দেখতে সুন্দর হওয়ায় এগুলোর প্রতি চাহিদা তৈরি হয়েছে।

ইঁদুরের খামার করার জন্য মামুনকে নানা মানুষের কটু কথা শুনতে হয়েছে। প্রথমদিকে তার কাজ মেনে নেয়নি পরিবারের লোকজনও। এই কাজের জন্য অনেকে তাকে পাগল বলে আখ্যায়িত করত। চূড়ান্ত সফলতার পরে তারাই এখন ঈর্ষান্বিত মামুনের প্রতি। এই লাভজনক ব্যবসা দেখে অনেকেই তাকে দেখে অনেকেই এখন আগ্রহী হচ্ছেন একই ধরনের খামার গড়ে তুলতে। 

সালাউদ্দিন মামুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ২০১২ সালে। এরপর ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ল্যাব সহকারী  হিসেবে যোগ দেন। ইঁদুরের খামার গড়ে তোলার পিছনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “একদিন তিনি দেখেন তার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন চারটে সাদা ইঁদুর ছেড়ে দিচ্ছে‌। সেগুলো অনেক ছোট, ছেড়ে দিলে বেঁচে থাকতে পারবেনা‌। তাই সেই ইঁদুরগুলো বাড়িতে এনে পোষা শুরু করেন।”

এর বহুদিন পর প্রাণীবিদ্যা মিউজিয়ামের একজন গবেষক মামুনের কাছে ২০ টি ইঁদুর চান। মূলত গবেষণার জন্য এত ইঁদুর প্রয়োজন ছিল। তখন মামুনের দেওয়া ২০ টি ইঁদুরের মূল্য হিসেবে মামুনকে ১০০০ টাকা দেন। টাকাটি পেয়ে মামুন অবাক হয়ে যায়। এরপর তার কাছে অনবরত ইঁদুরের অর্ডার আসতে থাকে। কিন্তু সীমিত পরিসরে ইঁদুর পালনের ফলে তিনি ইঁদুর সাপ্লাই করতে পারছিলেন না। পরে তার শিক্ষক বলে বাংলাদেশ ইঁদুর সরকারি ভাবে দু জায়গায় পাওয়া যায়, তা রাজশাহীতে আনা অনেক সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। মামুন যদি রাজশাহীতে বাণিজ্যিক ইঁদুরের খামার তৈরি করেন তবে তা অনেক সহজলোভ্য হবে। মামুন ইঁদুরের বাণিজ্যিক খামার তৈরি করেই লাভের মুখ দেখেন।