ইরানি তরুণী প্রায় পোশাক খুলে ঘুরছে এমন ছবিতে বিশ্ব আলোড়িত। সামাজিক মাধ্যমে বার্তা ছড়িয়েছে, ইরানের কড়া ইসলামি রীতির পোশাক বিরোধী হয়ে ওই তরুণী বিদ্রোহ করেছেন। হিজাব বিদ্রোহে বারহার অগ্নিগর্ভ ইরান ফের আলোড়িত। এই পরিস্থিতিতে ইসলামি রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে ফের সরব নাস্তিক যুক্তিবাদী (Taslima Nasrin) তসলিমা নাসরিন।
তিনি লিখেছেন,’যদি সাহসী হতে পারতাম এই মেয়েটির মতো!’ তসলিমা বরাবর যে কোনো ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে সরব। বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত তিনি।
তসলিমা লিখেছেন, ‘মেয়েটি হিজাবের বিরুদ্ধে এইভাবেই প্রতিবাদ করেছে তেহরানে। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সে এভাবেই, যেন কিছুই ঘটেনি, এমন স্বাভাবিক ভাবে, কাপড় চোপড় খুলে ফেলে, শুধু ব্রা আর প্যান্টি পরে মানুষের ভিড়ে হাঁটাহাঁটি করেছে। হয়তো গুনগুন করে গানও গেয়েছে। পুলিশ পরে তাকে গ্রেফতার করেছে, রীতিমত মাথা ফাটিয়ে, রক্ত ঝরিয়ে গ্রেফতার! হয়তো মাসা আমিনির মতো তাকে মেরেই ফেলবে। কিন্তু এই কাজটা তো সে করেছে। করতে পেরেছে!’
ইরানি ছাত্র আমির কবিরের পোস্ট করা ফুটেজটিতে দেখা যাচ্ছে, ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা ওই পোশাকবিহীন মহিলাকে আটক করছেন৷ বিতর্কের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র আমির মাহজব এক্সে বলেছেন “পুলিশ স্টেশনে … দেখা গেছে যে তিনি গুরুতর মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন এবং একটি মানসিক ব্যাধিতে ছিলেন।”
তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘কতভাবেই যে মেয়েরা হিজাবের প্রতিবাদ করেছে। চুল কেটে, চুলের নিশান বানিয়ে, হিজাব উড়িয়ে, হিজাব পুড়িয়ে! পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মাসা আমিনির মৃত্যু হলে ইরান জুড়ে যে অভূতপূর্ব হিজাব বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল, সেই আন্দোলনে ৫৫০ জন শহীদ হয়েছিল। এই সাহসী মেয়েটি জানে সব, জানে যে তাকে মেরেও ফেলতে পারে প্রশাসন, তারপরও সে এই কাজটি করে সবাইকে দেখিয়ে দিল প্রতিবাদের অন্য এক রূপ। নির্যাতন যখন তীব্র, প্রতিবাদও তীব্র হওয়া চাই। মেয়েটিকে এরপর পাগলের হাসপাতালে বন্দি করা হবে হয়তো। আহা, এমন পাগল যদি হতে পারতো সব মেয়ে!’