Bangladesh: সেনাপ্রধানের হুঁশিয়ারি ইউনূসকে: বিপর্যস্ত বাংলাদেশ কোন পথে?

Army chief puts Yunus on notice ঢাকা: বাংলাদেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেই এবার দৃঢ় বার্তা দিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে…

Army chief puts Yunus on notice

Army chief puts Yunus on notice

ঢাকা: বাংলাদেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেই এবার দৃঢ় বার্তা দিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন—আগাম জাতীয় নির্বাচন করতে হবে, সেনাবাহিনীর কাজে হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না, এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বড় সিদ্ধান্তে সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করতেই হবে।

বুধবার ঢাকার সেনাপ্রাঙ্গণে ‘দরবার’-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেনাপ্রধান এই বার্তা দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর প্রায় সব পদে থাকা উচ্চপদস্থ অফিসাররা, যুদ্ধপোশাকে। এই ‘শক্তি প্রদর্শন’ আসলে ছিল একটি কড়া রাজনৈতিক ইঙ্গিত।

   

ক্ষমতা নয়, ইতিহাসের শিক্ষা নিয়ে চলছেন জেনারেল

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহিংস অপসারণের পর সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে গঠিত হয় এই অন্তর্বর্তী সরকার। তবে জেনারেল ওয়াকার সরাসরি ক্ষমতা গ্রহণ করেননি। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, তিনি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে চলেন—বাংলাদেশে অতীতে যারা সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা নিয়েছেন, তাঁদের পরিণতি হয়েছে করুণ।

ওয়াকারের লক্ষ্য তিনটি-
১) গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা
২) রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা
৩) সেনাবাহিনীর পেশাদার ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখা

এই কারণেই তিনি চাইছেন আগাম নির্বাচন হোক, সেনাবাহিনী আবার ব্যারাকে ফিরুক, এবং জনগণের সরকার গঠন হোক।

ইউনূসের সঙ্গে মতবিরোধ তুঙ্গে Army chief puts Yunus on notice

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস একদিকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নির্বাচন কারচুপির অভিযোগ তুলছেন, অথচ নিজে কোনও নির্বাচিত প্রতিনিধি না হয়েও দেশের ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইছেন—এই দ্বৈত ভূমিকার বিরুদ্ধেই মূলত অবস্থান নিচ্ছেন সেনাপ্রধান।

সেনা মহলের দাবি, ইউনূস নাকি বিদেশি শক্তির সঙ্গে মিলে রাস্তায় অস্থিরতা তৈরি করে সেনাপ্রধানকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষছেন। তাই মঙ্গলবারের কড়া বার্তা, যেখানে বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধানদেরও পাশে রাখা হয়, তা ছিল বহুমাত্রিক বার্তা—সেনাবাহিনী ঐক্যবদ্ধ, তারা আর “অন্ধকারে থাকবে না”, এবং দেশের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও গোপন সমঝোতা বরদাস্ত করবে না।

রাখাইন করিডর নিয়ে সেনাবাহিনীর আপত্তি

সেনাপ্রধান তাঁর বক্তব্যে বিশেষভাবে উল্লেখ করেন চট্টগ্রাম থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য পর্যন্ত প্রস্তাবিত করিডরের কথা। ইউনূস সরকারের ভাষ্যে এটি ‘মানবিক সহায়তা করিডর’, কিন্তু বাস্তবে এই করিডর ব্যবহার হতে পারে মার্কিন সামরিক রসদ পাঠানোর পথ হিসেবে, যেটি মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের হাতে পৌঁছাতে পারে।

Advertisements

এই করিডরকে জেনারেল ওয়াকার আখ্যা দেন “রক্তাক্ত করিডর”—এবং বলেন, “বাংলাদেশ অন্যের যুদ্ধের ময়দানে পরিণত হতে পারে না।”

এই প্রকল্পের পেছনে রয়েছেন সদ্য নিযুক্ত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান—যিনি একজন প্রাক্তন কূটনীতিক ও বর্তমানে মার্কিন নাগরিক। তিনি বুধবার বলেন, করিডরের কোনও ‘সামরিক মাত্রা’ নেই, যদিও সেনাপ্রধানের বক্তব্যে স্পষ্ট—সেনাবাহিনী এই প্রকল্পে একেবারেই সায় দিচ্ছে না।

সেনাপ্রধানকে সরাতে ছক?

রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, ইউনূস জেনারেল ওয়াকারের পরিবর্তে সেনাপ্রধান হিসেবে বসাতে চাইছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসানকে, যিনি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রধান স্টাফ অফিসার এবং সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার অধীনে। সেনা সূত্রে খবর, সম্প্রতি তাঁর একটি বিদেশ সফর এবং মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গে অনুমতি ছাড়া বৈঠক জেনারেল ওয়াকারের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

এই পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী ইউনূসের কাছ থেকে চায়—কামরুল হাসানসহ কয়েকজন কর্মকর্তার অপসারণ, যাঁদের ওপর সেনাবাহিনীর আস্থা নেই।

বাংলাদেশ কোন পথে?

রাখাইন করিডর নিয়ে শুধু সেনাবাহিনীই নয়, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বামপন্থী দলগুলোও স্পষ্ট বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, এটি মার্কিন কৌশলের অংশ, যার উদ্দেশ্য চীনের মিয়ানমার-থেকে-বন্দরে প্রবেশ রুখে দেওয়া।

এই প্রেক্ষাপটে জেনারেল ওয়াকারের বার্তা শুধু একটি প্রশাসনিক নির্দেশ নয়—এটি সম্ভবত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের মোড় ঘোরানো এক সিদ্ধান্ত।

Bangladesh: Bangladesh Army Chief General Waker-Uz-Zaman issues a stern warning to interim government advisor Dr. Muhammad Yunus: early elections are a must, no interference in army affairs. He emphasizes military involvement in major defense decisions amidst political uncertainty & Rakhine corridor concerns.