ইসলামাবাদ: পাকিস্তানের পেশাওয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি হাইজ্যাক করে ২১৪ সেনা বন্দিকে হত্যা করা হয়েছে৷ এমনই বিস্ফোরক দাবি করল বালুচ বিদ্রোহীরা। তাদের বক্তব্য, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল৷ সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পর পাকিস্তান সরকার স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি৷ অনড় মনোভাব দেখিয়েছে৷ তাদের চ্যালেঞ্জকে উপেক্ষা করা হয়েছে৷ সেই কারণেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। বালুচ মুক্তি বাহিনী (BLA) পাকিস্তানি সেনার দাবি নাকচ করে বলে, সরকারের চূড়ান্ত অবজ্ঞা এবং অবিচল মনোভাবের কারণেই এই পরিণতি এসেছে।
বুধবার, বিদ্রোহীরা পাকিস্তান সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা দিয়েছিল, যাতে তারা বালুচ রাজনৈতিক বন্দি ও কর্মীদের মুক্তি দেয়, যাদের অভিযোগ তারা পাকিস্তানি সেনার হাতে অপহৃত।
BLA এক বিবৃতিতে বলেছে, “পাকিস্তান তার ঐতিহ্যগত অহংকার এবং অনড় মনোভাবের কারণে সত্যিকারের আলোচনায় অংশ নেয়নি৷ বরং বাস্তবতার প্রতি উদাসীন থেকেছে। এর ফল ২১৪ বন্দির মৃত্যু।”
বালুচ মুক্তি বাহিনী, বালুচিস্তানের স্বাধীনতাপন্থী বলেও পরিচিত৷ গত মঙ্গলবার পেশাওয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাক করে তারা৷ ওই ট্রেনে ৪০০-রও বেশি যাত্রী সফর করছিল, যাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিলেন। ট্রেনটি হাইজ্যাক করার আগে বিদ্রোহীরা রেলপথেও বিস্ফোরণ ঘটায়৷
পাকিস্তানি সেনা জানায় তারা বন্দিদের মুক্তির জন্য ৩০ ঘণ্টার একটি অপারেশন চালায়, যার ফলস্বরূপ ৩৩ জন বিদ্রোহী নিহত হয়। সেনার দাবি, এই অভিযানে ২৩ সেনা, ৩ রেলওয়ে কর্মী এবং ৫ যাত্রী প্রাণ হারিয়েছে।
তবে, বালুচ বিদ্রোহীরা পাকিস্তানের দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানায় যে তীব্র লড়াই এখনও চলছিল এবং সেনারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিল। BLA তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ফিদায়ীনরা কিছু সেনা বন্দিকে বিশেষ বগিতে লক করে রেখে, অন্যদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। পাকিস্তানি কমান্ডোরা পৌঁছানোর পর ফিদায়ীনরা আক্রমণ করে, ফলে কমান্ডোরা বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়, এবং বন্দিরাও প্রাণ হারায়।”
এই ঘটনাটি পাকিস্তান সরকারের প্রতি বালুচ বিদ্রোহীদের ক্ষোভ এবং বালুচিস্তানের স্বাধীনতার দাবিকে আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরেছে।