Attack On Gaza: ‘খাঁচা বন্দি ইঁদুর’ গাজাবাসীর জন্য গর্জন, তবে থাকতে দিতে নারাজ আরব দেশগুলো

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: আজ সকালের কাতারের সংবাদপত্রগুলোর সবকটার শিরোনামে গাজা নিবাসী ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা ও ইজরায়েলের হামলার ছবি বেরিয়েছে। পাতা উল্টোলেই আরব দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে গণবিক্ষোভের ছবিতে ভরপুর। আরব সিংহের গর্জন শুনছি। গর্জন উঠে আসছে আরব দুনিয়ার অন্তর্ভুক্ত এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলি থেকে। আরব নিউজের (Arab News) ই সংস্করণের বড় খবর, খোদ মার্কিন মুলুকে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভ চলেছে।

Advertisements

কবি সুকান্ত লিখেছিলেন “বিদ্রোহ চারিদিকে বিদ্রোহ আজ”। ফিলিস্তিনি আবেগের কারণে বিদ্রোহে মত্ত আরব রাজনীতি। প্রবল সহানুভূতির বন্যা এলেও এখনও পর্যন্ত কোনও আরব-পক্ষের দেশ গাজার ফিলিস্তিনিদের নিজ দেশে এনে রাখার কথা ঘোষণা করল না। সমস্ত ইসলামি দেশগুলি প্যলেস্টাইনের পতাকা সম্মানের সাথে বহন করে। নিজ নিজ দেশের পতাকার থেকেও বেশি ফিলিস্তিনি আবেগের গুরুত্ব দেয়, অথচ গাজা ভূখণ্ডে গবাদি পশুর খাটালের মতো গাদাগাদি করে জীবন কটানো লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনির জন্য জায়গা দিতে তারা নারাজ। এ কেমন সহানুভূতি ?

চারিদিকে ইজরায়েলের কঠিন সেনা বলয়ে ঘেরা ফিলিস্তিনিদের ছোট্ট ভূখন্ডের জল বিদ্যুত ও খাদ্য সবকিছু পেতে হয় ইজরায়েলের অনুগ্রহে। আর কিছু সাহায্য ও লেনদেন হয় গাজা ও মিশরের সীমান্তে থাকা রাফা চেকপোস্ট দিয়ে। ফিলিস্তিনি আবেগে মাতোয়ারা মিশর। কায়রোর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্র “আল আহরাম” এর ই সংস্করণ খুললাম। ফিলিস্তিনি আবেগের ছড়াছড়ি। কিন্তু মিশর সরকার কোনওভাবেই রাফা সীমান্তের দরজায় গাজা বাসিন্দাদের জন্য খুলবে না। মিশরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, শুধুমাত্র খাদ্য পানীয় ওষুধ সরবরাহ হবে গাজায়। আর গাজা থেকে যে সকল ভিনদেশি বেরোতে চান তাদের জন্য রাফা সীমান্তের ফটক খোলা হবে।

Advertisements

রাফা সীমান্তে মিশরীয় সেনা বন্দুক তাক করে রেখেছে গাজার বাসিন্দাদের দিকে। জোর করে ঢুকতে চাইলেই গুলি চলবে। আকাশে ঘুরছে ইজরায়েলি বোমারু বিমান। সামনে মিশরের সেনার বন্দুক। বিষ্ফোরক জামা পরে হামাস সদস্যরা নিরীহ ফিলিস্তিনি গাজাবাসীর মধ্যে আত্মঘাতী হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে। তাদের ঘিরছে ইজরায়েলি সেনা। এই অবস্থায় ভূমধ্যসাগরের জলে ঝাঁপানো একটা পথ হতে পারে। সেখানে আবার ইজরায়েল ও আমেরিকার রণতরী! গাজাবাসী যেন খাঁচাবন্দি ইঁদুর।

আসলে গাজার বাসিন্দাদের কিছু করার নেই। নিজেদের ভূখণ্ডে হামাস গোষ্ঠির বন্দুকের শাসন তাদের ভয়াবহ বিপদের মুখে ঠেলে দিল। অথচ এই ফিলিস্তিনিদের অপর অংশ ওয়েস্ট ব্যাংকে তেমন কোনও উত্তেজনা নেই। চলতি রক্তাক্ত পরিস্থিতিতে একটা গুলি চলেনি সেখানে। হামাস বিরোধী গোষ্ঠি ফাতাহ নিয়ন্ত্রিত প্যালেস্টাইন সরকারের কেন্দ্র রামাল্লায় ফিলিস্তিনি আবেগ আছে। নেই সংঘর্ষ।