ইউক্রেনের যাত্রীবাহী ট্রেনে রাশিয়ান হামলায় আক্রান্ত ৩০০

ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় সুমি অঞ্চলে রাশিয়ান সামরিক হামলায় (Russian Attack) একটি যাত্রী ট্রেনে সরাসরি আঘাত লাগার ফলে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ৪ অক্টোবর, ২০২৫-এর সকালে এই…

Russian Attack

ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় সুমি অঞ্চলে রাশিয়ান সামরিক হামলায় (Russian Attack) একটি যাত্রী ট্রেনে সরাসরি আঘাত লাগার ফলে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ৪ অক্টোবর, ২০২৫-এর সকালে এই হামলায় অন্তত ২১ জন নিহত এবং ৩০০-এরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ইউক্রেনের রেলওয়ে স্টেশনকে লক্ষ্য করে চালানো রকেট হামলায় ট্রেনটি দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে, যাতে কয়েকটি কামরা পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। এই ঘটনা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সাম্প্রতিকতম নৃশংসতার একটি উদাহরণ হিসেবে বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

Advertisements

সুমি অঞ্চলের গভর্নর ওলেহ হ্রিহোরভ তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জানান, “রাশিয়ান বাহিনী কিয়েভ যাওয়ার পথে একটি যাত্রী ট্রেনকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। স্টেশন এবং ট্রেনে আগুন লেগে গেছে, এবং চিকিৎসক ও রেসকিউ টিম কাজে নিয়োজিত।” ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ট্রেনের একটি কামরা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, এবং আহত যাত্রীরা চিৎকার করে সাহায্য চাইছেন।

   

বিরাট-রোহিতের ভাগ্য নির্ধারণ করল BCCI! নেপথ্যে এই কারণ?

ইউক্রেনের জাতীয় রেলওয়ে কোম্পানি ইউক্রজালিজনিসিয়া জানিয়েছে, এই ট্রেনটি স্থানীয় যাত্রীদের নিয়ে চলছিল, এবং হামলার ফলে ট্রেনের চলাচল ব্যাহত হয়েছে। কোনো নির্দিষ্ট হতাহতের সংখ্যা না দেওয়া সত্ত্বেও, প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে বেশিরভাগ শিকার নিরীহ বেসামরিক মানুষ। এই হামলা ইউক্রেনের রেলওয়ে পরিকাঠামোর উপর রাশিয়ার অবিরাম আক্রমণের অংশ।

গত দু’মাসে রাশিয়া প্রায় প্রতিদিন রেল লাইন, স্টেশন এবং ট্রেনকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, যা ইউক্রেনের অর্থনৈতিক ও লজিস্টিক কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সাম্প্রতিককালে ডনিপ্রো, কিয়েভ এবং ওডেসায় অনুরূপ হামলায় শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জুন মাসে ডনিপ্রোতে একটি মিসাইল হামলায় ২১ জন নিহত হয়েছে, যেখানে একটি যাত্রী ট্রেন এবং আশেপাশের ভবনগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। সেপ্টেম্বরে কিয়েভে একটি ইন্টারসিটি ট্রেনে ড্রোন হামলায় কয়েক মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে, যদিও সেখানে কোনো হতাহত হয়নি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলাকে “যুদ্ধাপরাধ” বলে অভিহিত করে বলেছেন, “রাশিয়া আমাদের সাধারণ মানুষের উপর অমানবিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই ট্রেনে যারা ছিল, তারা শুধু ঘরে ফিরছিল, কোনো সৈনিক নয়। বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখনই প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।”

রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও এই হামলার নিন্দা করে বলেছেন, “বেসামরিক পরিকাঠামোর উপর হামলা সম্পূর্ণ অগ্রহণীয়। এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন।” ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রও রাশিয়ার এই কাজকে “অমানবিক” বলে প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং ইউক্রেনকে আরও সামরিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।