BANGLADESH: বিলুপ্ত হবে আরও ২৫টি নদী, ‘জলের দেশ’ বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগ রিপোর্ট

স্বচ্ছ জলের স্রোতধারা বইছে বাংলাদেশের বুক চিরে। নদীমাতৃক এই বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল হিমালয় থেকে ছুটে আসা অসংখ্য নদ-নদীর প্রবাহ থেকে। আর সেই প্রবাহের সঙ্গে বয়ে…

স্বচ্ছ জলের স্রোতধারা বইছে বাংলাদেশের বুক চিরে। নদীমাতৃক এই বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল হিমালয় থেকে ছুটে আসা অসংখ্য নদ-নদীর প্রবাহ থেকে। আর সেই প্রবাহের সঙ্গে বয়ে আসা বিন্দু বিন্দু পলিমাটি যুগযুগ ধরে গড়ে তুলেছিল পৃথিবীর বৃহত্তম এই ব-দ্বীপ। বাংলাদেশের মানুষের জীবন-জীবিকা সবকিছুতেই রয়েছে নদী।বাহারি নাম আর আয়তনের এই নদনদী সমৃদ্ধ করেছে বাংলাদেশকে। নদীর পাড়ে মানুষের জীবন-জীবিকা নিয়ে তৈরী হয়েছে অনেক গান, কবিতা, উপন্যাস ও চলচ্চিত্র।

ষাটের দশকে প্রায় ৭৫০টি নদী বিপুল জলরাশি নিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল ২৪,১৪০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে। তবে জোরপূর্বক দখল, দূষণ এবং নাব্য সংকটে গত পঞ্চাশ বছরে সে দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে গিয়েছে ৫২০ টি নদী. বর্তমানে রুগ্ন হয়ে কোনভাবে বেঁচে আছে ২৩০টি নদী। বিশেষজ্ঞরা বলছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলির ঘুম না ভাঙলে আগামী পাঁচ বছরে বিলুপ্ত হবে আরো ২৫টি নদী।

ঢাকার আশপাশের নদ-নদীগুলো মৃতপ্রায়। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু, তুরাগ প্রভৃতি নদীতে দ্রবীভূত অক্সিজনের পরিমাণ অত্যন্ত কম। এই নদী গুলোতে জলজ জীব এবং অনুজীবের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হতে চলেছে। এসব নদী বিলুপ্ত হলে দেশ মরুভূমিতে পরিণত হবে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। যার অংশ হিসেবে দেশের সবচেয়ে প্রশস্ত নদী যমুনার নাব্য ফিরিয়ে তীররক্ষা এবং ভাঙ্গন রোধে ১০১৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে এই সংস্থাটি। দুই বছর মেয়াদী প্রকল্পের আওতায় যমুনার নাব্য ফিরিয়ে এর শাখা নদীতে জল প্রবাহ নিশ্চিত করা এবং ভাঙ্গন প্রতিরোধ সম্ভব হবে বলে জানান নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

যমুনা হল বাংলাদেশের জলপ্রবাহের মূলক্ষেত্র। যমুনা নদীর প্রবাহ নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশের অসংখ্য নদীতে জলের প্রবাহ সম্ভব হবে। এবং ভাঙ্গন থেকে মানুষ রক্ষা পাবে। নদীর নাব্য ফিরিয়ে সব মরশুমে ১০০০০ কিলোমিটার নৌপথ চালু পরিকল্পনা ও ডেল্টা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে হাসিনা সরকার।এরফলে স্রোতস্বীনি বাংলাদেশ তার পুরানো রূপ ফিরে পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।