২০২৪-এর গরমে বিশ্বজুড়ে হুঁশিয়ারি, চরম আবহাওয়ার আশঙ্কা

Global Climate Alarm: ২০২৩ সালে সারা বিশ্বে তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে যাওয়ার পর ২০২৪ সালেই আবারও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইউরোপীয় জলবায়ু সংস্থার (European Climate…

2024 Set to Break Heat Records, Global Climate Alarm Intensifies

Global Climate Alarm: ২০২৩ সালে সারা বিশ্বে তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে যাওয়ার পর ২০২৪ সালেই আবারও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইউরোপীয় জলবায়ু সংস্থার (European Climate Agency) তথ্যে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা এবার আরও একটি নতুন স্তরে পৌঁছতে চলেছে। এই পরিস্থিতিকে বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য এক গুরুতর সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছেন বিজ্ঞানীরা, কারণ চলতি বছর গড় তাপমাত্রা প্রথমবারের মতো প্রাক-শিল্পযুগের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্যারিস চুক্তি, ২০১৫ কি?
২০১৫ সালে করা প্যারিস চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল গ্লোবাল তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা এবং ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করা, যাতে জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবগুলি হ্রাস করা সম্ভব হয়। প্যারিস চুক্তি অনুসারে, ১.৫ ডিগ্রি অতিক্রম করলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত বন্যা ও খরার ঘটনা, ভূমিক্ষয় এবং বারবার বনভূমি অগ্নিকাণ্ডের মতো জটিল পরিবেশগত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

   

তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ
এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রধান দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, এল নিনো প্রভাব, যা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঘটে এবং এটি বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। এর প্রভাব পৃথিবীজুড়ে আবহাওয়া পরিবর্তন ঘটায়, বিশেষ করে বৃষ্টিপাত, গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা এবং শীতল আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখা যায়।

দ্বিতীয়ত, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, যা থেকে নির্গত ধোঁয়া ও ছাই বায়ুমণ্ডলে তাপ আটকে রাখে এবং তাপমাত্রা বাড়িয়ে তোলে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন এই পরিস্থিতি এক প্রকার “সতর্কবার্তা” যা দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উদ্দীপিত করা উচিত।

জলবায়ু সম্মেলন ও ট্রাম্পের ভূমিকা
এই রিপোর্টটি এমন সময়ে এসেছে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন, যিনি প্রায়ই জলবায়ু পরিবর্তনকে অমূলক বলে মনে করেন। তার পুনঃনির্বাচন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে কারণ বিশ্ব সম্প্রদায় আসন্ন জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন, কপ২৯-এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা আগামী সপ্তাহে আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।

জলবায়ুর উপর এর প্রভাব
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা যদি আরও বৃদ্ধি পায় তবে এর প্রভাব হতে পারে বহু জটিল ও বিপজ্জনক। উদাহরণস্বরূপ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে জলমগ্নতার ঝুঁকি বাড়বে, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেবে এবং ভূমিক্ষয় বেড়ে গিয়ে মানবজাতির জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও, আবহাওয়ার এই অস্বাভাবিক পরিবর্তন খাদ্য উৎপাদন, জল সরবরাহ এবং জনস্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের এই বৈশ্বিক সতর্কতাকে কেন্দ্র করে বিজ্ঞানীরা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, কারণ জলবায়ুর এই অবস্থা আমাদের জীবনের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক গুরুতর বিপদ সংকেত।

সামগ্রিক সমাধান ও করণীয়
পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সরকারগুলোকে আরো সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসতে হবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে নানা পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার, কার্বন নির্গমন হ্রাস এবং পরিবেশ সংরক্ষণের মতো পদক্ষেপে গুরুত্ব দিতে হবে।

এখন দেখার বিষয়, আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনে আন্তর্জাতিক নেতারা কী ধরনের পদক্ষেপের প্রস্তাব করবেন।

Advertisements