বহুদিনের নীরবতা ভেঙে প্রাণ ফিরে পেল বিজেপি (BJP) দলের ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্র, কলকাতার ৬ মুরলিধর সেন লেন। এই দফতর বহু নেতা-কর্মীর স্মৃতিতে এক আবেগের জায়গা। সেখানেই রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya) তাঁর প্রথম ‘কর্মী দরবার’ আয়োজন করলেন, যেটি দলের কর্মীদের সরাসরি মনের কথা জানানোর একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম।
দুপুর ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত, টানা চার ঘণ্টা চলে। শমীকবাবু(Samik Bhattacharya) দলের কর্মীদের কথা শুনলেন, তাঁদের অভিযোগ, প্রস্তাব এবং আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা মন দিয়ে গ্রহণ করলেন। এই ধরনের সংলাপ আগে খুব বেশি দেখা যায়নি, বিশেষত পুরনো দফতরে।
পুরনো ঘরে নতুন আলো
৬ মুরলিধর সেন লেন বিজেপির ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক স্থান। এখান থেকেই রাজ্যের বিজেপির উত্থান শুরু হয়েছিল। এক সময় এই অফিস ছিল রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র, যেখানে সাধারণ কর্মী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পা পড়েছে বারবার। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে, রাজ্য রাজনীতির পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে, এই দফতর কিছুটা গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছিল। নতুন ভবনে স্থানান্তর এবং দলীয় অস্থিরতার মধ্যে এই জায়গাটি যেন ভুলতেই বসেছিল অনেকে।
তবে এবার শমীক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ফের একবার সেই প্রাচীন আবেগ ফিরে আসছে। কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার এই উদ্যোগ শুধু যোগাযোগেরই নতুন পথ খুলে দিল না, বরং এক নতুন কর্মসংস্কৃতির ইঙ্গিতও দিল।
কর্মীদের কণ্ঠস্বরের প্রতি সম্মান
বিজেপির পুরনো কর্মীরা বলছেন, এই ধরনের দরবার অনেকদিন পর দেখলেন। কেউ বললেন, “আগে আমরা এখানে এসে যে কোনো সমস্যার কথা বলতে পারতাম। আজকের দিনে আবার সেই পরিবেশ ফিরে পেলাম।” আবার কেউ বললেন, “নতুন নেতৃত্ব আমাদের কথা শুনছেন—এটা আমাদের জন্য সাহসের বিষয়।”
শমীক ভট্টাচার্য নিজেও জানিয়েছেন, তিনি চান দল নিচু স্তরের কর্মীদের কথা শুনে সিদ্ধান্ত নিক। তাঁর মতে, “দল বড় হয় কর্মীদের কাঁধে ভর করে। তাঁরা যদি সন্তুষ্ট থাকেন, তাহলে দলও শক্তিশালী হয়।”
নতুন অধ্যায়ের সূচনা?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শুধুমাত্র এক ‘কর্মী দরবার’ নয়—এটা একটি বার্তা। বার্তা যে, বিজেপি আবার জোর দিয়ে সংগঠনকে গুরুত্ব দিচ্ছে, মাঠের স্তরের কর্মীদের গুরুত্ব দিচ্ছে। এর পাশাপাশি এটা এমন এক উদ্যোগ যা ভবিষ্যতের জন্য দলকে সংগঠিত ও প্রাসঙ্গিক রাখতে সাহায্য করতে পারে।
রাজনীতি শুধু নীতির খেলা নয়, তা মানুষের, আবেগের এবং সংযোগের খেলা। ৬ মুরলিধর সেন লেন সেই সংযোগের প্রতীক। ৩রা সেপ্টেম্বর সেই প্রতীক আবার আলোয় এল। শমীক ভট্টাচার্যের ‘কর্মী দরবার