কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছে SIR (Systematic Intensive Revision) প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে রাজ্যের ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে। এই কাজের অংশ হিসেবে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে বুথ লেভেল অফিসার (BLO) ভোটারদের হাতে তুলে দিচ্ছেন এনুমারেশন ফর্ম (Enumeration Form)। এই ফর্মই হবে ভোটার তালিকা সংশোধন ও নতুন নাম তোলার মূল উপায়।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রতিটি ভোটারের কাছে দুটি এনুমারেশন ফর্ম যাবে—একটি বিএলও জমা নেবেন, আরেকটি রিসিপ্ট কপি হিসেবে ভোটার নিজের কাছে রাখবেন। ফর্মে ভোটারের ছবি, পার্ট নম্বর ও বুথ নম্বর ছাপানো থাকবে।
এনুমারেশন ফর্মে যেসব তথ্য দিতে হবে:
১. জন্ম তারিখ
২. আধার নম্বর (ঐচ্ছিক)
৩. মোবাইল নম্বর
৪. পিতা বা অভিভাবকের নাম
৫. পিতা বা অভিভাবকের এপিক নম্বর (যদি থাকে)
৬. মায়ের নাম
৭. মায়ের এপিক নম্বর (যদি থাকে)
৮. স্বামী বা স্ত্রীর নাম (যাঁদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)
৯. স্বামী বা স্ত্রীর এপিক নম্বর (যদি থাকে)
১০. সাম্প্রতিক একটি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
ফর্ম পূরণ করার সময় ভোটারকে নিশ্চিত করতে হবে, সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে লেখা হয়েছে কি না। ফর্ম জমা নেওয়ার সময় বিএলও নিজের স্বাক্ষর দিয়ে গ্রহণের প্রমাণ দেবেন।
যদি কোনও ভোটারের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় না থাকে, তবে তাঁর বাবা, মা, দাদু বা ঠাকুমার নাম থাকলে সেই এপিক নম্বর ও বিধানসভার নাম ফর্মে উল্লেখ করতে হবে। এই তথ্য বিএলও-র মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে যাচাইযোগ্য।
ভোটারদের কোনও ডকুমেন্ট বা পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে না। শুধুমাত্র ফর্মে সঠিক তথ্য পূরণ করলেই হবে। কমিশনের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, কোনও অতিরিক্ত নথি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়।
বিএলও ভোটারদের কাছ থেকে ফর্ম সংগ্রহ করবেন। যদি ভোটার বাড়িতে উপস্থিত না থাকেন, তাহলে ফর্মটি দরজার ফাঁকে বা লেটারবক্সে রেখে আসা হবে। যাঁরা বাইরে থাকেন বা সরাসরি ফর্ম জমা দিতে চান, তাঁরা ইআরও অফিসে গিয়ে হাতে হাতে ফর্ম জমা দিতে পারবেন। এছাড়া ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের সিইও ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে ফর্ম পূরণ করা যাবে।
ফর্মটি রাজ্যের মানুষকে মাথায় রেখে বাংলা ভাষায় ছাপানো হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য ভাষার সংস্করণও বিএলও-দের কাছে থাকবে। ফর্মে বিএলও-র নাম ও মোবাইল নম্বর দেওয়া থাকবে, যাতে ভোটার প্রয়োজনে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।
নির্বাচন কমিশনের মতে, এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে ভোটার তালিকা আরও নির্ভুল ও হালনাগাদ হবে। প্রতিটি বুথে ভোটারদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করবেন বিএলও, যাতে কোনও ভোটার বাদ না পড়েন।

