মমতা সরকারের আমলে কোটি কোটি কালো টাকা শুধু কি শিক্ষক দুর্নীতির?

ইডি হেফাজতে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি সদ্য ২১ জুলাই অনুষ্ঠানেও মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠবৃত্তে ও তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব ছিলেন। ২২ জুলাই থেকে কোটি কোটি কালো টাকার…

ইডি হেফাজতে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি সদ্য ২১ জুলাই অনুষ্ঠানেও মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠবৃত্তে ও তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব ছিলেন। ২২ জুলাই থেকে কোটি কোটি কালো টাকার পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ে একদম  এক চিলতে অ্যাটাচড টয়লেট সহ লক আপে আছেন।বর্ষীয়ান পার্থর ঘনিষ্ঠ যুবতী বান্ধবী অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। আরও বিভিন্ন ফ্ল্যাটে অভিযান চলছে। রাজ্য জুড়ে অর্পিতা-পার্থর বাগানবাড়িগুলিতে অভিযান চলবে।

   

এই টাকা কি শুধু শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির? কারণ তদন্ত সূত্রে উঠে আসছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়। এক্ষেত্রে টাকার অংক আরও বাড়বে। এর সঙ্গে জমি সিন্ডিকেটের যোগ খুঁজছে ইডি। কয়লা পাচার, গোরু পাচারের মতো তীব্র আলোচিত তদন্তগুলির সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিভিন্ন ডেরায় পাওয়া কোটি কোটি টাকার সংযোগ স্পষ্ট বলেই মনে করছে ইডি।

এই এত বিপুল অঙ্কের টাকা হিমশৈলর চুড়া। এমনই দাবি বিরোধীদের। তবে বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী নিজেও নারদা কেলেঙ্কারিতে ফেঁসে আছেন। সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের দাবি, আসল ভান্ডার আছে কালীঘাটে।

কীভাবে এলো এই টাকা? সূত্র খুঁজে বেড়াচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা৷ জেরায় অর্পিতার দাবি ওই টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের৷ ইঙ্গিতে পার্থ বলেছেন টাকা দলের!

প্রবল চাপের মুখে তৃণমূল কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ২০১৬ সালে ৮ নভেম্বর নোটবন্দির পর কীভাবে এত টাকা উদ্ধার হল? সেই প্রশ্নের জবাব কেন্দ্র সরকার এবং আরবিআইকে দিতে হবে৷ বিরোধীদের তরফে প্রশ্ন, এই টাকা শুধুমাত্র শিক্ষক নিয়োগের নাকি সরকারী প্রকল্পের টাকাও এতে যুক্ত রয়েছে? প্রশ্ন উঠছে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী কি জানতেন না পার্থর গতিবিধি! অভিযোগ, মমতা সব জানতেন।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিভিন্ন ডেরা, নগদ টাকা, বিপুল সম্পত্তি শুধুমাত্র শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির টাকায় নয়। সেটা ভালোমতো আন্দাজ করতে পেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের দাবি, মমতাকে জেরা করলেই সব রহস্যের সমাধান হবে।

তৃণমূল কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক বলেছেন মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারব না। কারও বিরুদ্ধে জনসমক্ষে কোনও প্রমাণ এলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে সন্দেহ রয়েছে, তবুও খতিয়ে দেখুক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ বন্ধ করুক ইডি।

এখন প্রশ্ন হল শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি ছাড়াও যদি অন্য কোনও দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম জড়ায় তাহলে কী তার দায়ভার নেবে তৃণমূল। খবর আসছে জেলায় জেলায় পার্থর চক্র ভাঙতে নামছে ইডি।

partha_arest

সিপিআইএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, পার্থকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিয়ে আত্মরক্ষা করা যাবে না। এজন্য সমান অপরাধে অপরাধী মুখ্যমন্ত্রী। তিনি পদত্যাগ করুন।