ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাসনা গৃহের সামনের রাস্তা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ফেরত চাওয়ার মর্মে চিঠি দিলেন উপাচার্য। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষও করলেন। ‘নিজের চোখ দিয়ে বাস্তব না দেখে, মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখছেন!’ এমনটাই বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী চিঠিতে উল্লেখ করলেন। ফলক সরিয়ে নেওয়ার কথাও চিঠিতে রয়েছে। চিঠির শেষে শাসকদলের একাধিক মন্ত্রী, বিধায়ক ও নেতার গ্রেফতারি নিয়েও খোঁচা দেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে চিঠি লিখে বিতর্কে জড়ালেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
সেপ্টেম্বরে শান্তিনিকেতনকে ইউনেস্কোর তরফ থেকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা পাওয়ার পরই পূর্ত দফতরের কাছে থেকে উপাসনা গৃহের সামনের রাস্তা বিশ্বভারতীকে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর ফের চিঠি লেখেন তিনি। আজ রবিবার রাস্তা ফেরত চেয়ে তৃতীয়বার চিঠি লিখলেন উপাচার্য।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী লিখেছেন, “আপনি এখনও কান দিয়ে দেখেন।” এছাড়া রাজ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে দুর্নীতির অভিযোগ এবং তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারি নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন তিনি। তিনি লেখেন, আপনার মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রী গ্রেফতার হয়েছেন। আপনার বিশ্বস্ত নেতারা (কেউ বীরভূম থেকে) জেলে রয়েছেন। কেউ তিহাড়েও রয়েছেন।
চিঠি নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেছেন, “চিঠির ভাষা কী আছে জানি না। বর্তমান উপাচার্য এমন ভাব দেখাচ্ছেন, যেন সবকিছু তাঁর নিজস্ব। আমরা চাই বিশ্বভারতী নিজের ঐতিহ্য নিয়ে চলুক। কিন্তু উনি যেভাবে চলছেন তাতে বিশ্বভারতী থেকে রবি ঠাকুরকে মুছতে চাইছেন। এটা নিয়েই আমাদের আপত্তি।” তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এই নিয়ে বলেন, “বিশ্বভারতীর উপাচার্যের ভাষা এটা হতে পারে না।”
অপর দিকে, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, “রবীন্দ্র আদর্শের সঙ্গে যাঁর কোনও সম্পর্ক নেই, তিনি বিশ্বভারতীর উপাচার্য হয়েছেন। দিল্লির নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই এই পদ পেয়েছেন। এটা খুবই বিপজ্জনক। এটা আমাদের রাজ্যের সংস্কৃতির সঙ্গে কখনই যায় না। মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি চিঠি দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দাবির সঙ্গে আমরা সহমত কি না, সেটা বড় কথা নয়। আমার দাবি, ওই ফলক থেকে প্রধানমন্ত্রীর নাম বাদ দেওয়া উচিত। এই উপাচার্য কাউকে মানছেন না। সীমা লঙ্ঘন করে চলছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা করছি।”