হজরত মহম্মদকে নিয়ে হিন্দুত্ববাদী নেত্রী নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। শুক্রবার একাধিক জায়গায় হিংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়। ঝাড়খন্ড ও পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি এলাকায় ছিল অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি।
কলকাতা ও হাওড়ার হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডের জেরে বিক্ষোভকারীরা প্রবল সমালোচিত। খোদ মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের একটি অংশ চরম ক্ষুব্ধ। অনেকের অভিযোগ,যেভাবে প্রতিবাদের নামে তান্ডব চলেছে তাতে মহানবীর আদর্শের কোনও মিল নেই। হজরত মহম্মদের আদর্শ এমন নয়।
বিক্ষোভের নামে হিংসাত্মক পরিবেশ তৈরির কারণে বৃহস্পতি ও শুক্রবার রণক্ষেত্র হাওড়ার বিভিন্ন এলাকা। উলুবেড়িয়ার পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। ভাঙচুর, ইটবৃষ্টি, অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির পরেও বেশি করে সমালোচনা শুরু হয়েছে বিক্ষোভকারীদের নিয়ে।
শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অনুরোধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি বিক্ষুব্ধ জনতার উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে জানিয়েছিলেন, অবরোধ করতে হলে দিল্লিতে গিয়ে করুন। এখানে সাধারণ মানুষকে অসুবিধায় ফেলবেন না। একইসঙ্গে তাঁর বার্তা ছিল যারা এই ধরনের মন্তব্য করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় থানায় এফআই লার দায়ের করুন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে উপেক্ষা করেও অবরোধ, হিংসাত্মক আন্দোলন চলে।
শুক্রবার পরিস্থিতি ঘোরতর হতে পারে আঁচ করে আগে থেকেই হাওড়ার একাধিক জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। তাতে কাজ হয়নি। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে এলে বোমা চার্জ করে হামলাকারীরা। উত্তেজনা রুখতে হাওড়ার বিস্তির্ণ অংশে বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। উলুবেড়িয়া সাব ডিভিশনেও জারি ১৪৪ ধারা। চরম অসুবিধার মুখে আম জনতা৷
হিংসাত্মক পরিবেশের পর থেকেই স্যোশাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, প্রশাসন ও সরকার সঠিক সময়ে পদক্ষেপ না নিয়ে সাধারণ মানুষকে চরম হেনস্থার মুখে ফেলে দিচ্ছে। হচ্ছে। অনেকে বলছেন, এধরনের বিক্ষোভ দেখিয়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি করে সামগ্রিকভাবে প্রতিবাদের ধরনকে বদলে দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ মানুষের বক্তব্য, এতে বিক্ষোভকারীদের সমালোচনাই বেড়েছে।
অভিযোগ, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী কেন কোনও বার্তা দেননি। আরও প্রশ্ন, প্রথমদিকে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই দাবানলের আকার নেয় এই ঘটনা নাকি সমালোচনার পরেই নেওয়া হল পদক্ষেপ?
শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডে একই ঘটনা ঘটেছে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, সদ্য দেশের দীর্ঘ কৃষক আন্দোলন থেকে শৃঙ্খলা শব্দটি ধার করা উচিত ছিল। তাহলে সেই আন্দোলনের প্রতিটা শব্দ দিল্লি অবধি পৌঁছাতে পারত। আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে হত সরকারকে। এখানে তো বেশি সমালোচনা হল৷