অগ্নিকান্ডে বাড়ি পুড়ে ছাই, মাধ্যমিকের আগে পিতৃহারা হয়েও পরীক্ষায় বসলেন উলুবেড়িয়ার রেনুইয়া খাতুন

উলুবেড়িয়ার রেনুইয়া খাতুনের জীবনে দুঃখের অন্ত নেই। বাড়ি আগেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। বই, খাতা, অ্যাডমিট কার্ড সব কিছু আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছিল। এমনকি,…

rehena khatun madhyamik exam

উলুবেড়িয়ার রেনুইয়া খাতুনের জীবনে দুঃখের অন্ত নেই। বাড়ি আগেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। বই, খাতা, অ্যাডমিট কার্ড সব কিছু আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছিল। এমনকি, তার বাবা রিয়াজুল আলম মারাত্মকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কিন্তু সমস্ত দুর্দশা সত্ত্বেও, রেনুইয়া মন শক্ত করে নতুন অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর আগেই তার পরিবারে আসে দুঃসংবাদ—তার বাবা আজ সোমবার হাসপাতালেই মারা যান।

পরীক্ষার কিছুদিন আগে উলুবেড়িয়ার বাগনান থানার হালান গ্রাম পঞ্চায়েতের খাড়োল পাড়া এলাকায় একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যেখানে রেনুইয়া খাতুনের পরিবারের বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। রেনুইয়া, যিনি এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, তার সমস্ত বইপত্র, নোটস, পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ নথি আগুনে পুড়ে যায়। এমনকি, পুরো পরিবার খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে ছিল। অবশেষে স্থানীয় পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় পরে মাথা গোঁজার আশ্রয় পান।

   

শুক্রবার তাকে নতুন অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়। এদিন সকালে পরীক্ষার জন্য রওনাও হয়। যান গেছে রুপাসগড়ি হাইস্কুলে তার পরীক্ষার সিট পড়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার সময়েই পরিবারের কাছে আসে দুঃসংবাদ, তার বাবা আর নেই। তবে, পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বাবার মৃত্যুর খবর তখন জানানো হয়নি। এদিন রেনুইয়াকে পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছানোর সময় পঞ্চায়েতের প্রধান এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।

এদিন, ছাত্রীর বাবার মৃত্যু সংবাদ শোনার পরেই, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ মাসুদ স্কুলে উপস্থিত হন এবং পরীক্ষার শেষে রেনুইয়াকে তার বাড়ি নিয়ে যান। রেনুইয়ার পরিবার, যারা আগুনে সব হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে ছিল, সেই পরিবারের উপর এখন শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকার মানুষ শোকাহত হয়ে পড়েছেন রেনুইয়ার পরিবারে ঘটে যাওয়া এই দুঃখজনক ঘটনার পর।