হুগলি জেলার জাঙ্গিপাড়ায় সরকারি চাকরির নামে প্রতারণার এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে (Trinamool Leader)। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বহু মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু প্রতিশ্রুত চাকরি না পাওয়ার পাশাপাশি ভুক্তভোগীরা তাদের দেওয়া টাকাও ফেরত পাননি।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্তকে ধরে তার কাছ থেকে লিখিতভাবে টাকা ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকারনামা আদায় করেছেন। এই ঘটনা জাঙ্গিপাড়ায় ব্যাপক উত্তেজনা ও আলোচনার সৃষ্টি করেছে।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বেকার যুবক-যুবতীদের কাছে সরকারি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আদায় করে আসছিলেন।
তিনি দাবি করেছিলেন যে, তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করতে পারেন। এই প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে অনেকে তাঁর কাছে লক্ষাধিক টাকা প্রদান করেছিলেন। কিন্তু সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও চাকরির কোনো সুযোগ না মেলায় এবং টাকা ফেরতের দাবি জানালে অভিযুক্ত টালবাহানা শুরু করেন।
এই পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগীদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়, এবং তারা একত্রিত হয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) সন্ধ্যায় জাঙ্গিপাড়ার একটি গ্রামে ক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্তকে ঘিরে ধরে এবং তাঁর কাছ থেকে টাকা ফেরত দেওয়ার লিখিত অঙ্গীকারনামা আদায় করে। স্থানীয় এক ভুক্তভোগী জানান, “আমরা অনেকেই আমাদের জমানো টাকা, এমনকি ধার করে এই ব্যক্তির হাতে তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু চাকরির কোনো সম্ভাবনা নেই, আর টাকাও ফেরত দিচ্ছিলেন না।
ভিডিওটি শেয়ার করুন এবং আপনার এলাকায় একই রকম কাজ করুন।
সরকারি চাকরির নামে প্রতারণা!
হুগলি জেলার জাঙ্গিপাড়ায় বড় ধরনের প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকার বিনিময়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এক তৃণমূল কর্মী। চাকরি না পাওয়ার পাশাপাশি… pic.twitter.com/ostXy40UYK
— Tarunjyoti Tewari (@tjt4002) September 6, 2025
আমরা আর চুপ করে থাকতে পারিনি।” অভিযুক্তকে ঘিরে ধরার সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লেও, পরিস্থিতি স্থানীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।এই ঘটনা নিয়ে জাঙ্গিপাড়ায় তীব্র ক্ষোভ ও আলোচনা চলছে। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী নিজেকে দলের প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে দাবি করে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছিলেন।
তারা আরও অভিযোগ করেছেন যে, এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা শুধুমাত্র জাঙ্গিপাড়ায় নয়, জেলার অন্যান্য অংশেও ঘটছে। একজন ভুক্তভোগী বলেন, “আমরা শুধু টাকা ফেরত চাই না, আমরা চাই এই ধরনের প্রতারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”এই ঘটনায় স্থানীয় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, তারা এই বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালেও তদন্তে তেমন অগ্রগতি হয়নি।
ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং সিপিআই(এম), তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে বলেছে যে, রাজ্যে এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা শাসক দলের প্রশ্রয়ে ঘটছে। স্থানীয় বিজেপি নেতা সুজিত মণ্ডল বলেন, “তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মী সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের অপব্যবহার করছে। এই ধরনের প্রতারণা বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।”
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে যে, এটি ব্যক্তিগত প্রতারণার ঘটনা এবং দলের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।এই ঘটনায় জাঙ্গিপাড়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, তারা এই ঘটনার বিচারের জন্য আইনি পথে এগোবেন এবং প্রয়োজনে উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবেন।
বিহার-বিড়ি বিতর্কে ইস্তফা কেরল কংগ্রেসের Social Media প্রধানের
এই ঘটনা হুগলি জেলার রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। স্থানীয়রা এখন পুলিশ তদন্তের ফলাফল এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছেন। এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা ভবিষ্যতে রোধ করতে সরকারি ও প্রশাসনিক স্তরে কঠোর পদক্ষেপের দাবি উঠেছে।