দিঘা: আজ দিঘায় ( Digha Jagannath Temple) পালিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী উল্টো রথযাত্রা। মাসির বাড়ি থেকে নিজের ধামে ফিরবেন জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রা। হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে আজ গোটা সৈকত শহর মেতে উঠেছে ধর্মীয় আবেগে। আর সেই আবেগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গোটা এলাকায় নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
মূল রথযাত্রার মত উল্টো রথেও প্রশাসনের নজরদারি ও প্রস্তুতি সমান জোরালো। দিঘা জগন্নাথ মন্দির (Digha Jagannath Temple) এবং মাসির বাড়ি থেকে শুরু করে মন্দির অবধি প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। রাস্তায় স্থাপন করা হয়েছে একাধিক অস্থায়ী পানীয় জলের স্টল, অ্যাম্বুলেন্স এবং মেডিকেল ক্যাম্প।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উপস্থিত না থাকলেও তিনি সরাসরি ভিডিও মারফত উল্টো রথযাত্রা দেখবেন বলে জানানো হয়েছে। গোটা অনুষ্ঠানটি লাইভ সম্প্রচার করা হচ্ছে, যাতে মুখ্যমন্ত্রী সহ লক্ষ লক্ষ ভক্ত ঘরে বসেই এই মহাযাত্রার সাক্ষী থাকতে পারেন।
দিঘায় রয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য এবং জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি। তাঁদের উপস্থিতিতে গোটা অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য একাধিক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। জগন্নাথ মন্দিরের মূল গেটে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মী। সঙ্গে রয়েছে সিসিটিভি নজরদারি ও এলইডি আলোয় সাজানো প্রবেশপথ।
উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ জগন্নাথের ‘ভোগ’। কলকাতা ইসকনের সহ-সভাপতি এবং মন্দির ট্রাস্ট কমিটির সদস্য রাধারমন দাস বলেন, “আজ উল্টো রথে বসেই জগন্নাথ নিজের ধামে ফিরে যাবেন। মাসির বাড়িতে জগন্নাথের জন্য ৫৬ প্রকার ভোগের আয়োজন করা হয়েছে। রীতিনীতি মেনেই সব আচার পালন করা হচ্ছে। তিন দিন রথেই থাকবেন জগন্নাথদেব, তারপর মন্দিরে ফিরবেন।”
উৎসবের দিনে দুপুর একটা পর্যন্ত রাজ্যের চারজন মন্ত্রী ইতিমধ্যেই দিঘায় এসে পৌঁছেছেন। তাঁরা অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ে উপস্থিত ছিলেন এবং নিরাপত্তা ও ভক্তদের সুবিধা নিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন।
দিঘার উল্টো রথ শুধুই ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি বাঙালির আবেগ, ভক্তি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তা, আধুনিক ব্যবস্থাপনা এবং মুখ্যমন্ত্রীর ভিডিও মাধ্যমে সরাসরি নজরদারির ফলে এই রথযাত্রা হয়ে উঠেছে আরও সুশৃঙ্খল ও অভাবনীয়।
ভক্তদের জন্য এই অনুষ্ঠান শুধু ধর্মীয় নয়, একটি আত্মিক মিলনের অনুভূতি, যেখানে প্রযুক্তি, বিশ্বাস এবং ব্যবস্থাপনার সংমিশ্রণ ঘটে এক অপূর্ব রূপে।