আরজি কর হাসপাতালের যুবতী চিকিৎসককে(TMC Doctors) ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। এই ঘটনার পর তৃণমূলের চিকিৎসক(TMC Doctors) সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে বেশ কিছু বিতর্ক তৈরি হয়। সংগঠনের ‘আদি’ নেতারা এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হন বলে দলের অন্দরেই অভিযোগ উঠেছিল। একে অপরের বিরুদ্ধে দ্বন্দ্বের জেরে দলের অবস্থানও দুর্বল হয়েছিল। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেয় যে, পুরনো নেতাদের উপর আর আস্থা রাখা হবে না এবং নতুন নেতৃত্ব উঠে আসবে সংগঠনের দায়িত্বে।
দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীও একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন যে, চিকিৎসক নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও সংগঠনগত দুর্বলতা দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি করেছে। আরজি কর কাণ্ডের পর থেকেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব ভাবতে থাকে, নতুন, স্বচ্ছ ভাবমূর্তির চিকিৎসক নেতাদের নিয়ে নতুন সংগঠন তৈরি করা উচিত। এভাবেই সৃষ্টি হয় ‘প্রগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশন’, একটি নতুন চিকিৎসক সংগঠন।
এই নতুন সংগঠনটির নেতৃত্বে আনা হয়েছে শশী পাঁজা, যিনি শ্যামপুকুরের বিধায়ক এবং রাজ্যের মন্ত্রী। শশী পাঁজা, চিকিৎসক সংগঠনের সঙ্গে নিজেকে কখনোই যুক্ত করেননি, বরং তিনি দল ও সরকারের উন্নয়নে নিবেদিত থেকেছেন। তাঁর নেতৃত্বে, তৃণমূলের নতুন চিকিৎসক সংগঠনটি নতুনভাবে সংগঠিত হচ্ছে এবং শশী পাঁজা নতুন কমিটি ঘোষণা করেছেন। এই কমিটিতে সাতজন জনপ্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন নতুন মুখ।
নতুন সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন বালির বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায়, বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক খগেন মাহাতো। খগেন মাহাতো দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত, তবে তিনি কখনোই সংগঠনের সামনের দিকটাতে ছিলেন না। তিনি শুরুতে তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা উমা সোরেনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং পরবর্তীতে ২০২১ সালে গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক চূড়ামণি মাহাতোর বদলে টিকিট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাকে নতুন সংগঠনে সহকারী সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।
খগেন মাহাতো জানান, ‘‘যতটুকু সময় দল আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে, আমি তা পালন করেছি। এবারও নতুন সংগঠনে যে কাজ দেওয়া হবে, আমি তা করতে চেষ্টা করব।’’ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের পরিকল্পনা হচ্ছে, এই নতুন সংগঠনের মাধ্যমে সংগঠনকে আরো শক্তিশালী এবং স্বচ্ছ করা, যেখানে পুরনো দ্বন্দ্বের কোনো স্থান থাকবে না।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তের পর, চিকিৎসক সংগঠন নতুন উন্মুক্ত পথে এগোচ্ছে। দলের বর্তমান পরিস্থিতি এবং নতুন দলের উদ্যোগে আশা করা হচ্ছে, দলের ভাবমূর্তির পুনর্গঠন হবে এবং চিকিৎসক নেতাদের মধ্যে কোনো ধরনের বিভাজন থাকবে না।