‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ, আর বলব না।’ বুধবার দলের রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে এই মন্তব্য করে শোরগোল ফেলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সমর্থন করেনি দল। প্রধানমন্ত্রীর স্লোগানের বিরোধিতা করায় অস্বস্তি বাড়ে বিজেপির। শুভেন্দুর উল্টো সুর শোনা য়ায় পদ্ম শিবিরের বঙ্গ সভাপতি সুকান্তর মুখেও। এতসবের পরও দলীয় লাইনে না গিয়ে বিরোধী দলনেতার দাবিকেই সমর্থন করলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। এক্স হ্যান্ডেলে পোস্টে তথাগতর দাবি, ‘রাজনীতিতে সবাই সত্যিটা এভাবে জোরে বলতে পারে না। শুভেন্দু দীর্ঘজীবী হোন।’
কী লিখেছেন তথাগত রায়?
‘এত সত্যি এতটা জোরে বলার সাহস রাজনীতিতে সকলের থাকে না। শুভেন্দু অধিকারী দীর্ঘজীবী হোন। মঞ্চে শুভেন্দু যা বলেছেন, তা ধ্রুব সত্য। বাকিটা রাজনীতি। এর আগে যেমন ফিরহাদ বলেছিলেন ইসলামের বাইরে জন্মানো ব্যক্তিদের নিয়ে তিনি যা বলেছেন, তা তাঁর বিশ্বাস। আর সেই বিষয় নিয়ে মমতাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি দাবি করেন, তিনি বিষয়টি জানেন না – এটা রাজনীতি।’
শুভেন্দু, কালকে তুমি যা বলেছ তা অগণিত বিজেপি কর্মীর হৃদয়ের কথা। আমারও। অভিনন্দন।
— Tathagata Roy (@tathagata2) July 18, 2024
কী বলেছিলেন শুভেন্দু?
বুধবার কলকাতায় বসেছিল বিজেপির কর্মসমিতির সভা। এ রাজ্যে লোকসভা ভোটে দলের শোচনীয় পরিণতির কারণ বিশ্লেষণই ছিল ওই সভার উদ্দেশ্য। সেখানেই শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আমিও বলেছি রাষ্ট্রবাদী মুসলিম। আপনারাও বলেছেন, সব কা সাথ, সব কা বিকাশ। আর বলব না। বলব, হামারি সাথ হাম উনকা সাথ। সব কা সাথ, সব কা বিকাশ। বন্ধ করো। দাবি করছি সংখ্যালঘু মোর্চা তুলে দাও।’
বিতর্কে ঘি!
শুভেন্দুর মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়। প্রশ্ন ওঠে তাহলে কি বিরোধী দলনেতা প্রধানমন্ত্রীর ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’-এর স্লোগানের বিরোধী? জবাবদিহিতে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে প্রচুর ডেলিগেটস এসেছিলেন। আপনাদের একটা মাথায় রাখতে হবে, শুভেন্দুদা ওখানে ডেলিগেট। তো ডেলিগেটসরা অনেক প্রস্তাব দেয়। কোন প্রস্তাব গৃহিত হবে না হবে, সেটা রাজ্য সভাপতি ও তাঁর টিমের উপর নির্ভর করে। তো স্বাভাবিকভাবেই ডেলিগেটস হিসেবে উনি বলেছেন। তার ফলে গোটা ভারতবর্ষে যেটা দলের কাঠামো, তাতে তো সংখ্যালঘু মোর্চা আছে। আমি আমার অবস্থান পরিষ্কার করে দিয়েছি। আমার দল সমর্থন করে না, তো আমি কোথা থেকে সমর্থন করতে পারব?’
শুভেন্দুর পাল্টি-
নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পরে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘সংখ্যালঘু ভোট ব্যাংকের দখল নিয়েছে তৃণমূল। মেরুকরণ বুমেরাং হয়েছে বিজেপিতে। তাই বলতে হল সংখ্যালঘু মোর্চা তুলে দাও।’
এরপরও বিতর্ক থামেনি। তার মধ্যেই ফের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে শুভেন্দু বলেন, ‘আমার বক্তব্যের প্রেক্ষাপট বদলে দেওয়া হয়েছে। আমি স্পষ্টই এটা বলেছি যে, যাঁরা জাতীয়তাবাদী, দেশ ও বাংলার পক্ষে দাঁড়ান, তাঁদের সঙ্গে আমাদের থাকতে হবে। যাঁরা আমাদের সঙ্গে থাকেন না, দেশ এবং রাজ্যের স্বার্থবিরোধী কাজ করেন, তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মানুষকে সংখ্যাগুরু এবং সংখ্যালঘু হিসাবে ভাগ না করে ভারতীয় হিসাবে দেখব। আমি আক্ষরিক ভাবে এবং মনের থেকে প্রধানমন্ত্রীর সব কা সাথ-সবকা বিকাশ-সবকা বিশ্বাস-সব কা প্রয়াসের আহ্বানকে সমর্থন করি। ‘