Taslima Nasrin: অবাঙালিদের বাংলার ইতিহাস বর্ণনায় ক্ষুব্ধ তসলিমা

কলকাতা, ১২ সেপ্টেম্বর: সম্প্রতি একটি হিন্দিভাষার ছবি নিয়ে বাংলায় চড়েছে উত্তেজনার পারদ (Taslima Nasrin)। চলচ্চিত্র নির্মাতা বিবেক রঞ্জন অগ্নহোত্রীর ছবি দ্য বেঙ্গল ফাইলস নিয়ে চরমে…

Taslima Nasrin

কলকাতা, ১২ সেপ্টেম্বর: সম্প্রতি একটি হিন্দিভাষার ছবি নিয়ে বাংলায় চড়েছে উত্তেজনার পারদ (Taslima Nasrin)। চলচ্চিত্র নির্মাতা বিবেক রঞ্জন অগ্নহোত্রীর ছবি দ্য বেঙ্গল ফাইলস নিয়ে চরমে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এই ছবির মূল ভিত্তি ১৯৪৬ সালের হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা। রাজনীতির মঞ্চ তো বটেই তার সঙ্গে এই ছবি নিয়ে আদালতে পর্যন্ত লড়াই চালাচ্ছেন এই ১৯৪৬ এর নায়ক গোপাল মুখোপাধ্যায়ের পরিবার।

তাদের বক্তব্য ছবিতে গোপাল মুখোপাধ্যায়কে অবমাননা করা হয়েছে। তাকে কসাই এবং পাঁঠা বলা হয়েছে যা নিয়ে অসম্মানিত বোধ করেছেন গোপাল মুখোপাধ্যায়ের পরিবারবর্গ। এবার এই ইস্যুতেই মুখ খুললেন আরেক বিতর্কিত এবং জনপ্রিয় সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন। তিনি তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে স্পষ্ট বলেছেন “কেন উত্তর প্রদেশের লোকদের বাংলার কাহিনী নিয়ে হিন্দি ভাষায় সিনেমা বানাতে হয়? কেন বাঙালিরা বাংলার ইতিহাস নিয়ে সিনেমা বানাতে আগ্রহী নন?”

   

“আগ্রহী না হলে তারপর তো বহিরাগত কেউ এসে বানিয়ে ফেলে সিনেমা। বহিরাগত যদি ইতিহাস সঠিক ভাবে উপস্থাপন না করেন, তখন বেঠিক ইতিহাসই আমজনতার কাছে কিন্তু ‘ঠিক ইতিহাস’ হয়ে দাঁড়ায়।” তসলিমার এই বক্তব্যে সায় দিয়েছেন অনেকেই এবং বলেছেন এই ছবি শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য করা হয়েছে। ছবিতে শুধুমাত্র ইতিহাসের অপলাপ ছাড়া আর কিছুই নেই।

গোপাল মুখোপাধ্যায়কে এই ছবিতে হিন্দুদের মসিহা হিসেবে দেখানো হয়েছে। শুধু তাই নয় তিনি যে মুসলিমদের কতটা ঘৃণা করতেন তাও দেখানো হয়েছে এই ছবিতে যা সর্বৈব মিথ্যে বিবেকের কল্পনাপ্রসূত। অনেক সমালোচনাকারী বলেছেন গোপাল মুখোপাধ্যায় নিজেই তার বক্তব্যে বলেছিলেন তিনি কোনো ধর্মের বিরোধী নন।

Advertisements

শুধু মাত্র সেই সময় যারা মুসলিম লীগের হয়ে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্তর্গত করার চেষ্টা করেছিল তিনি তাদের বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। গোপাল মুখোপাধ্যায় তার জীবদ্দশায একটি ইন্টারভিউ তে বলেছেন হাতে অস্ত্র এবং কোমরে বন্দুক থাকা সত্ত্বেও তিনি পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে মুসলিমদের উপরে আক্রমণ করেননি। অহেতুক প্রাণ নেওয়া তার উদ্দেশ্য ছিলনা। কিন্তু বিবেকের ছবিতে গোপাল মুখোপাধ্যায়কে দেখানো হয়েছে সম্পূর্ণ সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে, যা সত্যের অপলাপ ছাড়া আর কিছু নয়।

উৎসবের আগে দিশেহারা শ্রমিকরা, ডুয়ার্সে বন্ধ একাধিক চা বাগান

তসলিমা তার পোস্টে স্পষ্ট করে দিয়েছেন এবং বাঙালি পরিচালকদের উপরে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন কেন বাংলার ইতিহাসের উপর ছবি করতে গেলে উত্তরপ্রদেশের মানুষকে এগিয়ে আসতে হয়। তারপরে যখন সেই ছবিতে ইতিহাস বিকৃত করার অভিযোগ ওঠে তখন বাঙালিরা গলা ফাটায় এবং কিছু মানুষ সেই ছবির দৃশ্যগুলোকেই আসল ইতিহাস বলে মনে করে। তসলিমা আরও বলেছেন এই ধরণের ছবি করতে হলে বাঙালি চিত্রপরিচালকদের এগিয়ে আসতে হবে এবং সঠিক ইতিহাস মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে।